আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রস্তাব না পাঠালেও খেকুয়ানী গ্রামের পাঁচ পরিবারের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এক কোটি ছয় লক্ষ পয়তাল্লিশ হাজার পাচ’শ বিয়াল্লিশ টাকা ব্যয়ে গাডার ব্রীজ নির্মাণের দরপত্র আহবান করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ওই ব্রীজ নির্মাণ করা হলে পাঁচ পরিবার ছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুলিশাখালী ইউনিয়নের মানুষের কোন কাজে আসবে না। জনস্বার্থে ওই ব্রীজটি স্থান পরিবর্তন করে ইউপি চেয়ারম্যানের দেয়া প্রস্তাবিত স্থান সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম মজিবুর রহমান তালুকদার বাড়ীর সামনে ঝুকিপূর্ণ ব্রীজটি নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। জনস্বার্থহীন ব্রীজের টেন্ডার হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানাগেছে, ১৯৯০ সালে উপজেলার সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান তালুকদার বাড়ী প্রাঙ্গণের খেকুয়ানী খালে ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। ওই ব্রীজ দিয়ে গুলিশাখালী ইউনিয়নের অন্তর ৩০ হাজার মানুষ ও কয়েকশ যানবাহন চলাচল করে। বর্তমানে ব্রীজটি অত্যান্ত ঝুঁকিপুর্ণ। যে কোন সময় ব্রীজটি ভেঙ্গে খালে পড়ে যেতে পারে বলে জানান স্থানীয়রা। এ গুরুত্বপুর্ণ ব্রীজটি নির্মাণ করতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড.এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে প্রস্তাব দেন। ওই অনুসারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ব্রীজটি নির্মাণসহ ১৫ টি ব্রীজ নির্মাণের প্রকল্প দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে পাঠান। কিন্তু একটি কুচক্রি মহল প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় ও চেয়ারম্যানের দেয়া প্রস্তাবিত স্থান পরিবর্তন করে ওই খালের ৫০০ মিটার দুরে পাঁচ পরিবারের সুবিধার জন্য আমির হোসেন তালুকদার বাড়ীর সামনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে ব্রীজ নির্মাণের দরপত্র আহবান করেন। ওই ব্রীজের দরপত্র প্রক্রিয়া গত জুন মাসে সম্পন্ন হয়। এক কোটি ছয় লক্ষ পয়তাল্লিশ হাজার বিয়াল্লিশ টাকা ব্যয়ে ওই ব্রীজ নির্মাণের কাজ পায় তালতলীর মেসার্স মোল্লা এন্টার প্রাইজ। পাঁচ পরিবারের জন্য কোটি টাকা ব্যয়ে জনস্বার্থহীন ব্রীজ নির্মাণের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ওই ব্রীজ নির্মাণ কাজ বাতিল করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় ও চেয়াম্যানের দেয়া প্রস্তাবিত স্থানে ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানান স্থানীয়রা। এ বিষয়ে আরিফুর রহমান তালুকদার আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তার হাওলাদার, মিজানুর রহমান, মনিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, পাঁচ পরিবারের জন্য সরকার কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রীজ নির্মাণ করবে, এটা উদ্দেশ্য প্রনোদিত। একটি কুচক্রি মহল অসৎ উদ্দেশ্যে এ বীজটি নির্মাণ করতে দরপত্র আহবান করেছে। এ ব্রীজের স্থান পরিবর্তন করে জনস্বার্থে সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম মজিবুর রহমান তালুকদার বাড়ীর সামনে ব্রীজটি নির্মাণের দাবী জানান তারা।
গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, প্রস্তাবিত স্থানে ব্রীজ নির্মাণ না করে কয়েকটি পরিবারের সুবিধার্থে স্থান পরিবর্তন করে ব্রীজ নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। জনস্বার্থে প্রস্তাবিত স্থানে ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানিয়ে বিভিন্ন দফতরে সুপারিশ পাঠিয়েছি।
আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের দেয়া প্রস্তাবিত স্থানে ব্রীজ নির্মাণ করতে দুর্যোগ অধিদপ্তরে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। বর্তমান স্থানে ব্রীজ নির্মাণের প্রস্তাব পাঠাইনি। কিন্তু কিভাবে ওই স্থান নির্ধারন হলো তা আমার জানা নেই।ওই ব্রীজের নির্মাণ কাজ বাতিল করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ওই ব্রীজের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর