গভর্নিং বডির সুবিধার জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষেই চলছে সহস্রাধিক কলেজ

প্রথম পাতা » বিশেষ প্রতিবেদন » গভর্নিং বডির সুবিধার জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষেই চলছে সহস্রাধিক কলেজ
শুক্রবার ● ৮ মার্চ ২০১৯


---

সাগরকন্যা এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট॥
দেশের সহস্রাধিক কলেজে গভনিং বডি নিয়োগ দেয়নি। বরং সহকারী শিক্ষক পর্যায় থেকে কাউকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বানিয়ে বছরের পর বছর ধরে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র রাজধানীতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে ৭০টি কলেজ। আর সারাদেশে এমন কলেজের সংখ্যা এক হাজারের বেশি। এর নেপথ্যের কারণ হচ্ছে- কলেজে নিয়মিত অধ্যক্ষ দিলে হয়তো তিনি গভনিং বডির অনুগত নাও হতে পারেন। ওই শঙ্কাতেই ওসব কলেজের গভর্নিং বডি নিয়মিত অধ্যক্ষ দিচ্ছে না। তার বিপরীতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে কার্যক্রম চালু রাখা হলে গভর্নিং বডির সব দাবি খুব সহজেই পূরণ করা সম্ভব। শিক্ষা বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গভর্নিং বডির সদস্যরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মূলত কয়েকটি দায়িত্ব নিয়মিত পালন করেন। তার মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের সকল লেনদেনের ক্ষেত্রে অধ্যক্ষের সঙ্গে ব্যাংক চেকে সভাপতির স্বাক্ষর থাকতে হয়। কিন্তু ওই লেনদেন সভাপতি ইচ্ছেমতো করেন। বিভিন্ন খাতে ব্যয় দেখিয়ে তছরুপ করা হয় প্রতিষ্ঠানের ফান্ড। অধ্যক্ষ কোনো কাজে স্বাক্ষর না দিতে চাইলে তাকে সরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। ওই ভয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষরা নিরব থাকেন। নিয়মিত অধ্যক্ষ থাকলে তাকে সরিয়ে দেয়া কঠিন। ওই কারণে নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগে গভর্নিং বডির যতো ভয়।
সূত্র জানায়, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষরা বিপাকে পড়লে অজুহাত হিসেবে নিজেদের ভারপ্রাপ্ত বলেই চালিয়ে দিচ্ছেন। আবার গভর্নিং বডিও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের উপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন। কোনো সমস্যা হলে একজন ভারপ্রাপ্তকে সরিয়ে আরেক জনকে দায়িত্ব দিচ্ছেন গভর্নিং বডি। তাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নানা জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, গত বছরের জুনে জারি করা এমপিও নীতিমালার জনবল কাঠামোতে উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ও ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগের যোগ্যতা এবং বেতন গ্রেড নিয়ে যে নির্দেশনা রয়েছে তা নিয়ে শিক্ষক সংগঠনগুলো আপত্তি জানায়। তাতে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি হবে বলে জানান তারা। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন নীতিমালা বাস্তবায়ন ও নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আগে ওই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। সেজন্য গত বছরের আগস্ট মাসে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছিল। তবে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নীতিমালা সংশোধন করে পরিপত্র জারি করে মন্ত্রণালয়।
এদিকে ঢাকা বোর্ডের এক পরিপত্রে বলা হয়, কলেজ এখন আর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলবে না। আদেশে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করেছে। সেখানে বর্ণিত শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বিধি মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দ্বারা পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে আগামী ৩ মাসের মধ্যে অধ্যক্ষ নিয়োগের নির্দেশ দেয়া হলো।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৫১:২০ ● ৭৩৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ