আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
সরকারী চাল ব্যবসায়ী ঘোটন কুন্ডুর গুদাম ঘরে। সাংবাদিকরা চালের ছবি তুলতে গেলে ব্যবসায়ী ঘোটন সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরণ করে। পরে সাংবাদিক রিপন মুন্সির মোবাইল কেড়ে নিয়ে আছাড় মেরে ভাংচুর করেছে। এ ঘটনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমকে জানালে তিনি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আবু জাহেরকে ঘটনাস্থলে পাঠান। কিন্তু তিনি ঘটনাস্থলে আসলেও কোন পদক্ষেপ না নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় আমতলী শহরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে আমতলী পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকায়।
জানাগেছে, শুক্রবার সকালে সরকারী আড়াই মেট্টিক টন চাল ব্যবসায়ী ঘোটন কুন্ডুর আমতলী পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকার গুদামে সংরক্ষণ করছিল। ওই চাল ব্যবসায়ী ঘোটন নুরজাহান ব্যান্ডের বস্তায় ভরছিল। খবর পেয়ে কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থল যায়। ওইখানে গিয়ে ব্যবসায়ীর গুদামে রাখা সরকারী চালের বস্তার ছবি তুলছিল সাংবাদিকরা। এ সময় ব্যবসায়ী ঘোটন সাংবাদিক রিপন মুন্সির হাত থেকে মোবাইলে কেড়ে নিয়ে আছার মেরে ভেঙ্গে ফেলে। তাৎক্ষনিক বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমকে জানালে তিনি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আবু জাহের ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবয়ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ জামাল হোসাইনকে ঘটনাস্থলে পাঠান। কিন্তু তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে চলে আসেন। এ ঘটনায় আমতলী শহরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবী করেছেন সাংবাদিক ও এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, ব্যবসায়ী ঘোটন কুন্ডুর গুদাম ঘরে সরকারী চালের অর্ধ শতাধিক বস্তা রয়েছে। তার দুই কর্মচারী গুদাম ঘর বন্ধ করে ভিতরে বসে ওই চালের বস্তা খুলে নুরজাহান ব্যান্ডের চালের বস্তায় চাল ভরছে।
ছবি তুলতে দেখেই দুই কর্মচারী পালিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, ঘোটন কুন্ডু প্রায়ই সরকারী চাল এনে নুরজাহান বস্তায় ভরে নুরজাহান ব্যান্ডের চাল বলে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করছে। তার এমন প্রতারনা প্রশাসনের লোকজন জানলে তারা তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ব্যবসায়ী ঘোটন কুন্ডুর এমন প্রতারনার বিচার দাবী করছেন তারা। তারা আর্ োবলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আবু জাহের ও পিআইও ঘটনাস্থলে আসলেও তারা কোন পদক্ষেপ না নিয়ে ঘর বন্ধ দেখে চলে যান।
সাংবাদিক রিপন মুন্সি বলেন, ব্যবসায়ী ঘোটন কুন্ডুর গুদামে সরকারী চাল রাখা আছে। এমন খবর পেয়ে ছবি ও তথ্য সংগ্রহে আসি। এসে দেখতে পাই সরকারী বস্তা থেকে দুই কর্মচারী চাল সরিয়ে নুরজাহান ব্যান্ডের বস্তায় ভরছিল। আমি ছবি তুলতে গেলে ঘোটন আমার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে আছার মেরে ভেঙ্গে ফেলেছে।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী ঘোটন কুন্ডু বলেন, সরকারী চাল গুদামে রেখেছি তাতে কি হয়েছে? পারলে কেউ কিছু করুক।
আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আবু জাহের বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ঘটনাস্থলে উপজেলা সহাকরী কমিশনার ভুমি আবু জাহের ও পিআইও মুহাম্মদ জামাল হোসাইনকে পাঠানো হয়েছে। তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি।
এমএইচকে/এমআর