আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পাওয়ার অফ এটনী দিয়ে বিপাকে আমতলীর খালেদা বেগম ও ফারজিনা রহমান মেরুন নামের দুই নারী। জমি ভোগ দখল করতে হলে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন তমাল তালুকদার ও তার সহযোগীরা। বুধবার এমন অভিযোগ এনে তমাল তালুকদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আমতলী জেলা পরিষদ ডাক বাংলোয় সংবাদ সম্মেলনে করেছেন খালেদা ও ফারজিনা। দ্রুত চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে খালেদা বেগম বলেন, ১৯৭৭ সালের ৬ আগষ্ট আমার বাবা আব্দুর রশিদ হাওলাদার ও মা ফজিলাতুন্নেছা বেগমের ক্রয়কৃত জমি আমার মামা আনোয়ার হোসেন তালুকদার, মনোয়ার হোসেন তালুকদার, বারেক তালুকদার, দেলোয়ার হোসেন তালুকদার ও জাহাঙ্গির তালুকদারের নামে বন্ঠননামা দলিল হয়। যার দলিল নং ৪২৮৫। বন্ঠননামার উল্লেখিত ব্যাক্তিদ্বয় অন্যত্র দলিল দেয়া ও পরিচিতি হওয়ার সুযোগ নেই। ওই সম্পত্তি আমার পিতা আব্দুর রশিদ হাওলাদার ও আমার মাতা ফজিলাতুন্নেছা ক্রয়কৃত সম্পত্তি। যাহা ৪২৮৫ নং দলিলে অর্ন্তভুক্ত করার এখতিয়ার নেই। ওই বন্ঠননামা দলিলে আমার বাবা ও মায়ের কোন স্বাক্ষর নেই। ওই জমি থেকে ২০০৩ সালের ১০ মে আব্দুল হালিম মৃধা ও আমেনা বেগমের নামে ৩৫ শতাংশ সাব কবলা দলিল দেই (যার দলিল নং ২৯৮৬)। ওই দলিলের পরিচিতি মামুন তালুকদার এবং স্বাক্ষি আনোয়ার হোসেন তালুকদার ও বারেক তালুকদার । যারা ৪২৮৫ নং বন্ঠননামা দলিলের ১ নং এবং ৩ নং দাতা ও গ্রহিতা। তিনি আরো বলেন, আমার বাবা ও মায়ের মৃত্যুর পরে ওই জমি আমরা পাচ বোন ও দুই ভাই ওয়ারিশ সুত্রে ভোগদখল করিতেছি। ওই জমির নতুন খতিয়ান খোলা হয়। নামজারী রেকর্ড মুলে ২০১৭ সালের ২০ জুন আমরা ওয়ারিশরা মিলে বাদল আকন ও রশিদ প্যাদাকে ২৩.৩১ শতাংশ জমির দলিল দেই। ওই দলিলের ১ নং স্বাক্ষি শাহ আলম তালুকদার। যিনি ৪২৮৫ নং দলিলের ২ নং দাতা ও গ্রহীতা মনোয়ার হোসেন তালুকদারের পুত্র। আমরা ওয়ারিশগণ ঢাকায় থাকি এ সুবাদে তমাল তালুকদার ও তার সহযোগীরা জমি আমাদের ভোগদখল করতে দিচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে সম্পত্তি রক্ষায় ১১৩৯ নং খতিয়ানের এক একর ৯৪ শতাংশ জমি ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর ও ২৩ সালের ৯ মে জুলেখা বেগম, মতিয়ার রহমান, মোজাম্মেল হোসেন, সফিউল আজম সোহেল গাজী ও তোফাজ্জেল হোসেন তপুর নামে পাওয়ার অর এটর্নি দেই। ওই জমি তাদের সার্ভেয়ার সীমানা পিলার স্থাপন করে দেন। কিন্তু তমাল তালুকদারের বাবা আব্দুল বারেক তালুকদার আমার মায়ের জমি বিক্রয়ের দলিলে স্বাক্ষি থাকার পরেও আমার মামার ছেলে তমাল তালুকদার, পিয়াল তালুকদার ও মৃণাল তালুকদার তা মানছেন না। উল্টো বে-আইনী ভাবে আমাদেরকে হয়রানী করছে। আমার ছোট মামা জাহাঙ্গির হোসেন তালুকদারের তিন ছেলে মঈন তালুকদার, নাজমুল আহসান পাপুল ও ডীকেন তালুকদার একইভাবে হয়রানী করছে। অথচ আমার মামা জাহাঙ্গির তালুকদার এ জমি তার বলে দাবী করছেন না। গত ৩ জুন আমাদের কাছে তমাল, মৃণাল, মঈন, পাপুল, ডীকেন ও পিয়াল তালুকদার ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। তাদের দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দেয়ায় তারা আমাদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করছে। নিরুপায় হয়ে তাদের সাড়ে সাত লক্ষ টাকা দেই। কিন্তু তাতে তারা সন্তুষ্ট নন। চাঁদার অবশিষ্ট টাকা না দেয়ায় তারা আমাদের প্রাণ নাশ ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। আমরা তাদের ভয়ে ভীত সন্তুষ্ট। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, মোঃ সফিউল আজম সোহেল গাজী, তোফাম্মেল হোসেন তপু ও ফারজিানা রহমান মেরুন।
তমাল তালুকদার চাঁদা দাবীর কথা অস্বীকার করে বলেন, জোরপুর্বক আমাদের জমি দখল করছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে আমাদের ্িবরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদা দাবীর নাটক সাজিয়েছেন।
আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর