চরফ্যাশন(ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চরমানিকা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের চর কচ্ছপিয়া গ্রামের এক কিলোমিটার কাঁচা সড়কটি পাকা না করায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শতশত লোককে কাঁদা ভেঙে যাতায়াত করতে হয়। বর্ষায় সড়কটি কর্দমাক্ত হয়ে যায়। ফলে কোনো ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল তো দূরের কথা, মানুষ পায়ে হেঁটে চলতেও কষ্টের শিকার হন। বিকল্প কোন সড়ক না থাকায় গ্রামবাসী বাধ্য হয়েই কাঁদা-পানি মাড়িয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে।
এলাকাবাসীর দাবী দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই এ সড়কটি কাঁচা। সামান্য বৃষ্টি হলেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। প্রতিনিয়তই মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কাঁচা সড়ক পাকা হবে এ আশায় এলাকাবাসী বছরের পর বছর অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু কাঁচা সড়ক আর পাকা হয় না। জনপ্রতিনিধিরা বারবার শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আজঅবধি ওই সড়কটিতে কোন কাজ হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, চলমান দু’তিন দিনের বর্ষায় দীর্ঘ দিনেও সংস্কার না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই কাঁদা পানিতে একাকার। সড়কের মাঝ খানে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য বড় বড় গর্ত। আর তাতে প্রতিনিয়ত জমছে পানি। চলাচল করতে পারছে না যানবাহন। পায়ে হেটে চলাচল করাও এখন কষ্টসাধ্য। সড়কটি পাকা হলে একদিকে যেমন বিভিন্ন গ্রামের ছাত্র-ছাত্রী ও লোকজনের যাতায়াতে ভোগান্তি কমবে, অন্যদিকে মুমূর্ষু রোগী বহনে বেগ পেতে হবেনা। শ্রমজীবী মানুষেরা ভ্যান, অটোরিকশা চালিয়ে সহজে জীবিকা-নির্বাহ করতে পারবেন। এলাকার কৃষকরা ধান, পাট, কাঁচা ফসল কম খরচে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের সড়কটি এ জীবনদশায় তারা আর পাকা দেখে যেতে পারবে না। এ গ্রামের শিক্ষার্থীরা কাঁচা সড়কটি ব্যবহার করে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতে হচ্ছে ।
এই গ্রামের কর্মজীবী জাকির হোসেন বলেন, গ্রামের মানুষের হাট-বাজারে যাতায়াতের একটি মাত্র সড়ক এটি। বর্ষার দিনে এই সড়ক দিয়ে একেবারেই চলাচল করা যায়না। অনেক সময় মাটি পিচলে বয়স্ক মানুষ পড়ে গুরুতর আহত হয়। মোটরসাইকেল, ভ্যান গাড়ি, সাইকেল কাদাঁর মধ্যে ডেবে গিয়ে উল্টে যায়। প্রসূতি মা কিংবা জরুরী রোগী হাসপাতালে নেওয়ার জন্য এম্বুলেন্স কিংবা গাড়ি গ্রামের মধ্যে ঢোকানো যায়না। আমাদের এই দুর্ভোগ দেখার কেউই বুঝি নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, দিনের বেলায় কোন রকম করে জুতা হাতে নিয়ে কাঁদা পার হওয়া যায়। কিন্তু রাতের বেলায় আর যাওয়া যায়না। আমরা এলাকাবাসী এই সড়কটি দ্রুত পাকা হওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন সাগর বলেন, সড়কটির জন্য অনেক দপ্তরে যোগাযোগ করেছি কিন্তু কারো কাছ থেকে কোন প্রকার আশ্বাস পায়নি। তারপরও আশা করি সড়কটি অতি দ্রুত সংস্কার করা হবে।
স্থানীয় সমাজকর্মী ৫নং ওযার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মন্নান মিয়া জানান, আমার বাড়ির সংলগ্নে এই সড়কটির বিষয়ে স্থানীয় চর মানিকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ হাওলাদারকে একাধিক বার বলা হয়েছে। কিন্তু সে কোন প্রকার গুরুত্ব দিচ্ছে না। সর্বশেষ আমি সড়কটি সংস্কার করার লক্ষ্যে আমাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি বরাবর একটি আবেদন করি।
চরফ্যাশন উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, সড়কটির বিষয়ে এমপি মহোদয়কে অবগত করেন ।
এএইচ/এমআর