স্বামী ও শ্বাশুরিকে ফাঁসাতে গায়ে আগুন দেয় অগ্নিদগ্ধে নিহত মিম

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » স্বামী ও শ্বাশুরিকে ফাঁসাতে গায়ে আগুন দেয় অগ্নিদগ্ধে নিহত মিম
মঙ্গলবার ● ১৩ জুন ২০২৩


স্বামী ও শ্বাশুরিকে ফাঁসাতে গায়ে আগুন দেয় অগ্নিদগ্ধে নিহত মিম

পটুয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

স্বামী ও শ্বাশুরিকে ফাঁসাতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গায়ে আগুন লাগিয়েছিলেন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার হালিমা আক্তার মিম। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেছেন তার চাচাতো ভগ্নিপতি মো. আরিফ হোসেন। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষন করে সন্দেহভাজন হিসেবে আরিফকে শনাক্তের পর গত ১১ জুন রাতে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ এন্ড প্লাষ্টিক সার্জারি হাসপাতালের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করে পটুয়াখালী নিয়ে আসা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সোমবার আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন তিনি।

দুপুরে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিং-এ সাংবাদিকদের এসব কথা জানান পুলিশ সুপার মোঃ সাইদুল ইসলাম। পুলিশ সুপার বলেন আসামীকে কোর্টে চালান দেওয়া হয়েছে এবং তার জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা সে বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আরিফের ভাষ্যমতে, শ্বাশুরি পিয়ারা বেগমের সাথে মিমের সম্পর্ক ভালো ছিলোনা। পিয়ারা বেগম মিম ও তার সন্তানকে প্রায়শই নির্যাতন করত। যন্ত্রনায় অতিষ্ট হয়ে আগুন লাগানোর একটি নাটকের পরিকল্পনা করেছিল মিম। ভাগ্যের  নির্মম পরিহাসে  নিজের ফাঁদে নিজেই ধরা খেয়েছেন।  ঘটনার আগেই বাসায় ২লিটার কেরোসিন তেল সংগ্রহ করে রেখেছিলেন মিম। ঘটনার দিন আরিফকে ফোন করে বাসায় আসতে বলে গায়ে কেরোসিন ঢেলে নিজেই নিজেকে বাধেন এসময় তাকে বাধা দিলেও আরিফের বারণ শোনেন নি। পরে বাধ্য হয়ে আরিফ আগুন লাগিয়ে দরজা বন্ধ করে সেখান থেকে চলে যায়। পরে শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্তান জিসানকে প্রতিপালনের জন্য আরিফকে অনুরোধ জানান মিম। আরিফ হেসেন হালিমা আক্তার মিমের চাচাতো বোনের স্বামী। তিনি উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের কার্তিকপাশা গ্রামের মৃত হামেদ সিকদারের ছেলে। তিনি ঢাকায় কেরানীগঞ্জে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ৮ জুন বিকেলে দুমকি উপজেলার নতুন বাজার এলাকায় হালিমা আক্তার মিমের শরীরে আগুন দিয়ে ঘরের দরজা সামনে থেকে লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এসময় মিমের পাশাপাশি অগ্নিদগ্ধ হয় তার শিশু সন্তান ওয়ালিফ হোসেন জিসান। আর্ত চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠায়।  গত শুক্রবার ৯জুন মিমের মামা ওমর ফারুক বাদী হয়ে দুমকি থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে শুক্রবার সকালে  মিমের শাশুড়ি পিয়ারা বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মিম। ময়না তদন্ত শেষে শনিবার রাতে দুমকিতে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।

জেআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:০৭:২১ ● ৮৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ