ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
প্রথম ধাপের ৮৩ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে রবিবার। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হবে, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। উপজেলা নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী ভোটগ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগে সব প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ। এ জন্য শুক্রবার মধ্যরাতেই শেষ হয়েছে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। ভোটের পরবর্তী ৬৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা বা মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ থাকবে।
বিগত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রথম ধাপের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের মাধ্যমে প্রচারণা শুরু হয়। বিরামহীন প্রচারণা চালিয়েছেন প্রার্থীরা। তবে দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিতব্য পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ২৯ উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। এর মধ্যে ১৬ জনই উপজেলা চেয়ারম্যান। ৮৩ উপজেলায় এক কোটি ৫২ লাখ ৭০ হাজার পাঁচজন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে গত বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেন কমিশনাররা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রথমধাপে বিভিন্ন উপজেলায় নির্বাচনী মালামাল নির্বাচনী এলাকায় ঠিকমতো পৌঁছেছে কিনা-সে বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে।
এছাড়াও পঞ্চম উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে কোনো ত্রুটি বা অনিয়ম আছে কিনা, থাকলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কি না, না হলে কেন নেওয়া হয়নি- রিটার্নিং কর্মকর্তাকে তলব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। গত ৩ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১২ জেলার ৮৭ উপজেলায় ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হয়। পরে আদালতের আদেশে রাজশাহীর পবা উপজেলার ভোট স্থগিত করা হয়। আর জামালপুরের মোলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও নাটোর সদরে সব প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে ওই তিন উপজেলায় ভোট হচ্ছে না। এ ছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৬ জন চেয়ারম্যান, ছয়জন ভাইস চেয়ারম্যান ও সাতজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ৮৩ উপজেলায় ২১৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৪০৬ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং ২৭৩ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
প্রথমধাপে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছয় হাজার ২১৯টি এবং ভোটকক্ষ ৩৯ হাজার ১৫৯টি। ভোটের আগে দুদিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরে দুদিন মিলিয়ে পাঁচদিন আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকবেন। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, আর্মড পুলিশ, ব্যাটালিয়ন সদস্যরা থাকবেন শৃঙ্খলা রক্ষায়। নির্বাহী ও বিচারিক হামিক থাকবে আচরণবিধি প্রতিপালনে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন-পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেবে। সেই সঙ্গে ভোটের সাত দিন আগে থেকে বৈধ অস্ত্র লাইসেন্সধারীদের অস্ত্র বহন, প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশ থাকবে সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ভেদে। সাধারণ কেন্দ্রে ১৪ জন, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৫ জন; বিশেষ এলাকায় (পার্বত্য, হাওর ও দ্বীপ) সাধারণ কেন্দ্রে ১৫ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৬ জন নিয়োজিত থাকবে।
উল্লেখ্য, ১০, ১৮, ২৪ ও ৩১ মার্চ চার ধাপে পঞ্চম উপজেলা পরিষদের ভোট হবে। পঞ্চম ধাপে বাকি উপজেলার ভোট হবে ১৮ জুন। গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপিসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল।
এফএন/এমআর