আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
ঘুর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কে উপকুলীয় অঞ্চল আমতলী ও তালতলীর লক্ষাধীক মানুষ। ঝুঁকিতে বসবাস করছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। মোখা মোকাবেলায় দুই উপজেলায় ১৭৪ টি সাইক্লোণ সেল্টার এবং তিন হাজার ৩০০ জন সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপকুলের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানাগেছে, ঘুর্ণিঝড় মোখা পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দুরে দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। উপকুলীয় অঞ্চল আমতলী ও তালতলীকে ৪ নং দুরবর্তী হুশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সাগর ও পায়রা নদীতে মাছ ধরারত জেলে ট্রলার ও নৌকাকে নিরাপদ স্থানে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। এদিকে পায়রা নদী সংলগ্ন চার কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে চাওড়া ঘটখালী তিন’শ মিটার, বালিয়াতলী দুই কিলোমিটার ও জয়ালভাঙ্গা এক কিলোমিটার বাঁধ অধিক ঝুঁকিতে আছে। আমতলী ও তালতলী উপজেলা প্রশাসন এক লক্ষ মানুষের জন্য ১৭৪ টি সাইক্লোণ সেল্টার এবং তিন হাজার ৩০০ জন সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসাইন। ঘুর্ণিঝড়েরর খবরে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শুক্রবার খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, সাগর ও পায়রা নদী সংলগ্ন নিদ্রা সকিনা,আশারচর, জলায়ভাঙ্গা, খোট্টারচর, আমখোলা, তালুকদারপাড়া, আগাপাড়া, নিউপাড়া, ফকিরহাট, চরপাড়া, গাবতলী, পচাঁকোড়ালিয়া, বালিয়াতলী, আড়পাঙ্গাশিয়া, পশ্চিম আমতলী, আমুয়ার চর, ঘটখালী, গুলিশাখালী ও হরিদ্রাবাড়িয়ার এলাকার মানুষ ঘুর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কে রয়েছে।
তালতলী উপজেলার ফকিরহাট বাজারের ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুস সালাম হাওলাদার বলেন, সাগর ও পায়রা নদী উত্তাল রয়েছে। মোখার খবরে এই মুহুর্তে সাগর ও নদীতে মাছ ধরা জেলে নৌকা ও ট্রলার অবস্থান করছে না।
গাবতলী আবাসনের ছত্তার হাওলাদার বলেন, ঘুর্ণিঝড় মোখার খবরে পরিবার পরিজন নিয়ে আতঙ্কে আছি। কি করবো এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না?
বালিয়াতলী গ্রামের মোঃ সাইদুর রহমান আকন বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নড়বরে। মোখার প্রভাবে পায়রা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
আমতলী পৌরসভার সিপিপির টিম লিডার মোঃ রিপন মুন্সি বলেন, ঘুর্ণিঘড় মোখা মোকাবেলায় সিপিপির সকল টিম প্রস্তুত আছে। পরিস্থিতি বুঝে কাজ করা হবে।
আমতলী সিপিপির সহকারী পরিচালক মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ঘুর্ণিঝড় পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার (বিকেল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত) দুরে বঙ্গোপসাগরে দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। উপকুলীয় অঞ্চলকে ৪নং দুরবর্তী হুশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মানুষকে নিরাপদে নিতে স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, মোখা মোকাবেলায় উপজেলায় ৬৩ টি সাইক্লোণ সেল্টার এবং ১১৮০ জন সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মোখার প্রভাব দেখে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ঘুর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। উপজেলায় অর্ধলক্ষ মানুষের জন্য ১১১ টি সাইক্লোণ সেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, উপকুলের একজন মানুষকে অনিরাপদ রাখা হবে না।
এমএইচকে/এমআর