চরফ্যাশন ভোলা সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
মিথ্যা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এমএলএসএস (পিয়ন) পদে চাকরি করছেন মো. ফিরোজ নামের এক কর্মচারি। ভোলা জেলার চরফ্যাশনের স্থায়ী বাসিন্দা হয়েও ভূয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা দেখিয়ে তিনি এ পদে চাকরি নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক আইনজীবী। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরে আসলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
অ্যাড. নুরে আলম নোমান সালমান লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে এমএলএসএস পদে লোক নিয়োগের বিজপ্তি দেওয়া হয়েছিল। শুধুমাত্র ঢাকা জেলার বাসিন্দাদের কাছ থেকে এ পদে আবেদন পত্র আহ্বান করা হয়েছিল। অথচ মো. ফিরোজ ভিন্ন জেলা ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা। তার পিতার নাম মো. ইউছুফ মোল্লা, মায়ের নাম ময়ফুল। স্থায়ী ঠিকানা গ্রাম আমিনাবাদ, ওয়ার্ড নং ৫, ডাকঘর আমিনাবাদ, উপজেলা চরফ্যাশন, জেলা ভোলা। শুধুতা-ই নয় তার বাপ-দাদার স্থায়ী ঠিকানাও ভোলা জেলায়।
ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনে ফিরোজ ভোলা জেলার বাসিন্দা হওয়ার কারণে প্রথমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দেয়নি। পরে তিনি ঢাকার জনৈক অহিদউল্লাহকে ভূয়া মামা পরিচয় দিয়ে ও তার পালক সন্তান দেখিয়ে আবার কাগজ পত্র জমা দেন। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রভাবিত করে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এমএলএসএস পদে চাকরিতে নিয়োগ লাভ করেন।
এ পদের চাকরিতে দীর্ঘ অর্ধযুগ ধরে বহাল তবিয়তে থাকাকালীন তার নানা পরিবর্তন লক্ষ্যনীয় হয়ে ওঠে। সামান্য এমএলএসএস পদে চাকরিতে তার বেতনের আয়ের সাথে ব্যয়ের কোন সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যায় না। কোটি টাকা ব্যায়ে জমি ক্রয় ও ইমারত নির্মাণ নিয়ে তাই নানা প্রশ্ন ওঠে। ইতোমধ্যে তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জে ৫কাঠা জমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণসহ চরফ্যাশন পৌরএলাকায় উচ্চমূল্যে ৬ কাঠা দামী জমি কিনে ইমারত নির্মান করেছেন বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে।
মো. ফিরোজ দাখিল ও আলীম পাশ করেন চরফ্যাশন আমিনাবাদের মাদ্রাসা থেকে। ফিরোজের অন্য সব ভাইবোন স্থায়ীভাবে ভোলার চরফ্যাশনের আমিনাবাদ গ্রামে বসবাস করেন। ফিরোজের নামে চরফ্যাশন উপজেলার ৫নং আমিনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নাগরিক সনদের কপিও রয়েছে। উপরোক্ত তথ্যদিতে প্রমাণিত হয় যে, ফিরোজ ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। ফিরোজ তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে এলাকাবাসীর কাছে ‘ম্যাজিস্ট্রেট’ হিসাবেও পরিচয় দিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এসব প্রতারণামূলক কর্মকান্ড ও মিথ্যা-জালজালিয়াতির তথ্য দিয়ে চাকরিতে বহাল থাকায় রাষ্ট্রের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগে তুলে ধরা হয়েছে। যা ফৌজদারি অপরাধের শামিল বলে তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করা হয়।
অভিযোগ অস্বীকার করে মো. ফিরোজ মোল্লা বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। নাটক সাজানো হচ্ছে। জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে এই গুলো বলা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে ঢাকা জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ অভিযোগটি আমার নজরে আসেনি। তিনি খবরটি প্রকাশ করার কথা জানান। অভিযোগপত্রটি তার অফিসিয়াল ইমেইলে দেয়ার কথাও বলেন।
এএইচ/এমআর