নেছারাবাদ (পিরোজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
নেছারাবাদের সন্ধ্যানদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে দিনে দিনে পাল্টে যাচ্ছে কৌরিখাড়া ও গনমান গ্রামের মানচিত্র। মঙ্গলবার বিকেলে সন্ধ্যানদীর পশ্চিম পাড়ের আকস্মিক ভাংগনে দ. কৌরিখাড়া লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকার মো. শহীদুল ইসলাম, মো. সেলিম হোসেন ও মো. মিজান, মো. সজিব, লাল মিয়া (ফিটার) ও আবুল কালামের বসতঘর এবং গনমান গ্রামের মরহুম হাছেন আলী চেয়ারম্যানের প্রায় ২০ শতাংশ বাগানবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং ভাঙ্গন সংলগ্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে ছোট বড় অনেক ফাটল।
গত চার মাস পুর্বে সন্ধ্যানদীর আকস্মিক ভাংগনে ইন্দুরহাট ফেরিঘাটের ফেরিতে ওঠা নামার গ্যাংওয়েসহ ঘাট সংলগ্ন তিনটি দোকানও মালামালসহ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাংগনের কারনে ইতোমধ্যে কয়েক দফা কৌরিখাড়া লঞ্চঘাট ও খেয়াঘাট স্থানান্তর করা হয়েছে। বছর খানেক পুর্বে সোহাগদল গ্রামের নুর খানের বসতঘরসহ বাগানবাড়ি এবং গনমান গ্রামের কয়েকটি পরিবারের বসত ঘর সহ প্রায় ২০ একর বাগানবাড়ি সন্ধ্যার অতল গর্ভে তলিয়ে গেছে ।
সন্ধ্যানদীর পশ্চিম পাড়ের দক্ষিন কৌরিখাড়া, পুর্ব সোহাগদল, গনমান গ্রামের নদী ভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে। একে একে সন্ধ্যার গহ্বরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসত ঘর, বাগানবাড়ি, ফসলী জমিসহ বির্স্তীন জনপদ। নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়ে ছিন্ন মূলে পরিনত হয়েছে অনেক পরিবার। সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে ইতিমধ্যে দক্ষিন কৌরিখাড়া ও গনমান গ্রামটি প্রায় দুই তৃতীয়াংশ বিলীন হয়ে গেছে। ভিটে মাটি হারিয়ে অনেক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় অনেক পরিবার এখনও তাদের শেষ আশ্রয় স্থল বসত ভিটায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। স্বরূপকাঠি- পিরোজপুর সড়কের কামারকাঠি নামক স্থানে নদী ভাংগনের ফলে চরম ঝুঁকির মধ্যে যানবাহন চলাচল করছে। প্রায় ৩ যুগ থেকে সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে ইতোমধ্যে উপজেলার, উত্তর কৌরিখাড়া, দক্ষিন কৌরিখাড়া, ছারছীনা, শান্তিহার, কুনিয়ারী জলাবাড়ী, পুর্ব সোহাগদল, গনমান, মুনিনাগ, কামারকাঠি, ব্যাসকাঠি, সেহাংগল এলাকার অনেকের বসত ভিটে ,হাজার হাজার একর ফসলী জমি সহ বিস্তীর্ন জনপদ সর্বনাশা সন্ধ্যা গ্রাস করে নিয়েছে। ৬/৭ বছর পুর্বে উত্তর কৌরিখাড়া ও দক্ষিন কৌড়িখাড়া ভাঙ্গন কবলিত খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকায় ভাংগন রোধে সামান্য এলাকায় ব্লক ও জিও টেক্স বালু ভর্তি ব্যাগ ফেলা হয়। সম্প্রতি ফেরিঘাট এলাকায় জিও টেক্স বালু ভর্তি ব্যাগ ফেলা হয়। খেয়াঘাট ও ফেরি ঘাটের মধ্যবর্তী দ. কৌরিখাড়া এলাকা এবং ফেরি ঘাটের দক্ষিন দিকের পুর্ব সোহাগদল ও গনমান গ্রামের ভাঙ্গন অব্যাহত রযেছে।
নদী ভাঙ্গন রোধে করনীয় ব্যাপারে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবি) পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবে মাওলা মো. মেহেদী হাসান জানান, সন্ধ্যানদীর ভাঙ্গনের ভিডিও দেখেছি। ঘটনাস্থলে লোক পাঠানে হয়েছে। তিনি আরও জানান আগে থেকেই ওটি টেন্ডার করা হয়েছিল। ভাঙ্গনের আগে কাজ শুরু হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে।
আরএ/এমআর