গোপালগঞ্জ সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
গোপালগঞ্জে নার্সিং ইনস্টিটিউটে ভর্তি-বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ইনস্টিটিউটের নার্সিং-ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ স্বপ্না রানী হীরা, হেডক্লার্ক উজ্জ্বল শেখ ও ক্যাশিয়ার সনাতন বালার যোগসাজসে দিনের পর দিন সেখানে এসব অনিয়ম দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, সেখানে বাইরের লোকও নাকি প্রশাসনিক নির্দেশ-নির্দেশনা দিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ৭৫ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি নেয়া হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভর্তি হওয়া বেশকিছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভর্তির নামে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে সাড়ে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছে; অথচ তাদেরকে রশিদ দেয়া হয়েছে ৩ হাজার ৮’শ ১০ টাকার। বাকী টাকার রশিদ চাইলে দেয়া যাবে না বলে জানায় অফিস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া রশিদবিহীন আরও দেড় থেকে ২ হাজার টাকা নিয়েছে মেডিকেল ও অন্যান্য পরীক্ষা বাবদ।
এছাড়াও, হোস্টেলের ছাত্রীদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে বিভিন্ন ছুটিসহ অন্যান্য সুবিধাদি প্রদান এবং বছর ধরে ইনস্টিটিউটের পিক-আপ ভ্যানের মেরামত ও তেল খরচ দেখিয়ে বড় অংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
নার্সিং ইনস্টিটিউটের ক্যাশিয়ার সনাতন বালা সাংবাদিকদেরকে বলেন, ইনস্টিটিউটের ইনচার্জ যেভাবে বলেছেন, সেভাবেই টাকা নিয়ে ৩ হাজার ৮’শ ১০ টাকার রশিদ দিচ্ছি। বাকী টাকার কোন রশিদ দেয়ার ব্যাপারে নিষেধ আছে।
এসব বিষয় নিয়ে ইনস্টিটিউটের নার্সিং-ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জের সঙ্গে আলাপ করতে গেলে সেখানে উপস্থিত তার স্বামী শহরের এস এম মডেল গভ: হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক মঙ্গল চন্দ্র বিশ্বাস সাংবাদিকদের দেখেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে উপায়ান্তর না দেখে সেখানকার কোন দায়িত্বশীল লোক না হয়েও তিনি উত্তেজিতভাবেই ওই অফিসের ক্যাশিয়ারকে পরবর্তীতে ছাত্রীদেরকে অতিরিক্ত আদায়ের রশিদ দিয়ে দিতে বলেন।
পরে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে ইন্্স্টিটিউটের নার্সিং-ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ স্বপ্না রানী হীরা সাংবাদিকদের বলেন, মেডিকেল বাবদ ৭’শ টাকা ও প্যাথলজী ৭’শ টাকা সহ অভিভাবকদের ওরিয়েন্টেশন, ছাত্রীদের অফিসিয়াল ফাইলপত্র মেইন্টেন্যান্স, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, ইলেট্রিক বাল্ব ও অন্যান্য খরচ রয়েছে। গত জুন মাসের পরে এ পর্যন্ত আমাদের কোন বাজেটই দেয়নি। তাই নিয়ম নাই জেনেও লোকালভাবে আমরা অতিরিক্ত টাকা নিতে বাধ্য হচ্ছি। তবে, ছাত্রীদের ছুটি মঞ্জুর ও আভ্যন্তরীণ নিয়ম-শৃঙ্খলার বিষয়ে বা পিক-আপ ভ্যানের খরচ সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।
এইচএকে/এনইউবি