কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার হাট-বাজারের ইজারা নিয়ে চলছে ধ্রুমজালের খেলা।ক্ষমতাশীল দলের প্রভাবশালী মহলের হস্তক্ষেপে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাটগুলোকে সরকারী খাসে পরিনত করার পায়তারা চালাছে। হাটগুলো নিলামে উঠলেও সিন্ডিকেটের কারনে সেখানে কোন সাধারন ইজারাদার অংশগ্রহন করতে পারছেন না। ফলে নির্দিষ্ট সময় শেষে খাসে পরিণত হচ্ছে হাটগুলো। এতে সুবিধা ভোগ করছে প্রভাবশালী মহল। নাম মাত্র সরকারি খাজনায় নিজেদের পছন্দের লোকের হাতে হাটের ইজারা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারন ইজারাদার। পাশাপাশি সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব। ইজারাদার নিলামে অংশ না নিলে হাটগুলো খাসে নেয়া ছাড়া কোন উপায় নেই বলে দায় সাড়া উত্তর দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবী সাধারন ইজারাদারদের।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা যায়,এ উপজেলায় মোট ১৫টি হাট রয়েছে। এরমধ্যে ৬টি হাটের নিলামে কোন ইজারাদার অংশ না নেয়ায় হাটগুলো এখন সরকারী খাসে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ হাটগুলো হলো মহিপুর,হাফেজ প্যাদা,নোমরহাট,পাটুয়া,লক্ষীর ও পক্ষীয়াপাড়া হাট। এছাড়া লালুয়া,চাপলী,তেগাছিয়া,ছোট বালিয়াতলী,বড় বালিয়াতলী,ডালবুগঞ্জ, দেবপুর,কালু মিয়া ও আলীপুর হাট ইজারা হয়েছে। তবে এ হাটগুলোর কয়েকটি সিস্টেমের মধ্যে ফেলে খাসে পরিণত করা হতে পারে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। গত বছর নোমর হাট ৮০ লক্ষ ও মহিপুর হাট ৮৪ লক্ষ টাকায় সর্বোচ্চ নিলামে ইজারা দেয়া হয়।বিগত বছরে সবগুলো হাট কয়েক কোটি টাকায় ইজারা হয়ে আসছে। কিন্তু এ বছর কিছু ইজারাদার ফরম ক্রয় করলেও সিন্ডিকেটের কারনে শেষ পর্যন্ত কেহ নিলামে অংশ গ্রহন করেনি। ফলে মোটা অংকের টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
উপজেলার খেয়াগুলোও একই পথে রয়েছে। উপজেলার মোট ২০টি খেয়ার মধ্যে ৮টি খেয়া এখন পর্যন্ত ইজারা দেয়া হয়েছে। বাকীগুলোর অবস্থা কি হবে তা নিয়ে নিশ্চিত নয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তবে কোন ইজারাদার পাওয়া না গেলে অবশিষ্ট খেয়াগুলো খাসে পরিণত হতে পারে এমনটাই জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিস।
এদিকে নাম না বলার শর্তে একাধিক ইজারাদার জানান, হাট-বাজারগুলো নিয়ে কলাপাড়ায় এখন হরিলুট চলছে। আমরা সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পরেছি। আমরা সাধারন ইজারাদার তাদের ক্ষমতার সাথে পারছি না। তাই মুখ বুঝে তাদের সাথে তাল মিলিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। তারা আরোও বলেন, গত বছর বড় বালিয়াতলী ও চাপলী হাটসহ কয়েকটি হাট নিলামে বিক্রি হলেও পরবর্তীতে সিস্টিমের মাধ্যমে তা খাসে পরিণত হয়। এবারও সেই পদ্ধতিতে ইজারা দেয়া হাটের অনেকগুলোই খাসে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের মতে, অনেকেই নির্দিষ্ট মূল্যের অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে নিলাম কিনেছে। কিন্তু পরবর্তীতে তারা টাকা দিতে ব্যর্থতা স্বীকার করলে হাটগুলো খাস ল্যান্ডে পরিণত করা হয়। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হলেও প্রভাবশালী নেতাদের পকেট ভারী হচ্ছে।
মহিপুর হাটের বর্তমান ইজারাদার আক্তার হোসেন তালুকদার জানান, এবছর সে ফরম ক্রয় করেছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিলামে অংশ গ্রহন করেনি।
নোমর হাটের ইজারাদার তনু মাতব্বর জানান, এ হাটের নিলামে সে ফরম ক্রয় করেছে তবে অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারন করায় নিলামে অংশগ্রহন করেননি। বাজারটি এবছর খাস ল্যান্ডে যেতে পারে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা একে একে তিনবার নিলাম ডেকেছি। কিন্তু কেহ তাতে অংশগ্রহন করেনি। তাই প্রক্রিয়ানুযায়ী ৬টি বাজার খাস ল্যান্ডে যাবে। তবে বাকী বাজারগুলোর ইজারা দেয়া হয়েছে।
এসকেআর/এমআর