আগৈলঝাড়া (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সন্ধ্যা নদীতে জেগে ওঠা চরে দখিণা হাওয়ায় দোল খাচ্ছে সবুজ ধানের ক্ষেত। সন্ধ্যা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে কৃষককের রোপিত ধান গাছের পাতা সোনালী রোদে দিগন্ত জুড়ে ঝিলমিল করছে। এতে রোপিত ফসলের বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। জেগে ওঠা চরে অল্প খরচে ধান চাষ করতে পেয়ে কৃষকরা খুশি হয়েছেন।
সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের পয়সারহাট সন্ধ্যা নদীর দু’পাড়ে জেগে ওঠা চরে স্থানীয় গোপাল হালদার, ভগীরথ হালদার, জয়নাল মিয়া, অধীর হালদার, সোহরাব বখতিয়ার, জ্ঞানদা হালদার, রবি হালদারসহ ১৫-২০ জন কৃষক প্রায় ৮হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে। বর্তমানে ধান গাছে ধানের অঙ্কুর বের হওয়ার সময় হয়েছে। বৈশাখ মাসের শেষের দিকে কৃষকরা পাকা ধান ঘরে তুলতে পারবেন। এখানে চাষাবাদে খরচ কম হওয়ায় কৃষকদের চড়ে চাষাবাদে আগ্রাহ বাড়ছে। এখানে ইরিক্ষেতে সেচের পানির জন্য কোন চিন্তা করতে হয়না। চাষাবাদের জন্য সার ও কীটনাশক খরচ অনেক কম। তবে সন্ধ্যা নদীর পানি কিছুটা নোনাযুক্ত ও কিছু জমিতে মাদ্রা পোকার আক্রমণ হওয়ায় দু:শ্চিন্তা করছে চাষীরা। পয়সারহাট সন্ধ্যা নদীর উত্তরে মাদারীপুর জেলার মোস্তফাপুর ও দক্ষিণে বরিশালের জেলার বিশারকান্দি, হারতা ও স্বরূপকাঠি। এক সময় পয়সারহাট নদী বন্দর-ঢাকা লঞ্চ চলাচল করতো। বর্তমানে নদীতে চর পরে যাওয়ায় ঢাকাগামী লঞ্চ বিশারকান্দি পর্যন্ত চলাচল করছে। পূর্বে পয়সারহাট সন্ধ্যা নদীটি খর¯্রােতা ও গভীর ছিল। নদীটির উপর দিয়ে গৌরনদী-আগৈলঝাড়া-গোপালগঞ্জ মহাসড়ের জন্য ব্রিজ নির্মাণ করায় নদীটিতে বালু জমে রামশীল, পীরারবাড়ি, সাতলা, আমবৌলা, বাগধা, বিশারকান্দি ও চৌমুহনীসহ বিভিন্ন স্থানে চর জেগে উঠেছে। একসময়ে নদীটি এক হাজার ফুট পাশে থাকলেও বর্তমানে রয়েছে আড়াইশ’ ফুট। যা দিয়ে নৌকা, ট্রলার, ছোট লঞ্চ ছাড়া অন্য কোন নৌযান চলাচল করতে পারছে না। এব্যাপারে চরে ধান চাষ করা কৃষক গোপাল হালদার জানান, একসময়ে নদীতে আমাদের বাপ-দাদার জমি ভেঙে বিলীন হয়ে গিয়েছিল। নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ করায় চর পরে। ফলে জেগে ওঠা চরে আমরা অল্প খরচে ১০-১২ বছর ধরে ধান চাষ করে আসছি।
পয়সারহাট বন্দরের ব্যবসায়ী আ. রহিম বয়াতি, ফায়েক ঘরামী, শ্যামল ওঝা, অরবিন্দু বলেন, আমরা পয়সারহাট বন্দরের ব্যবসায়ীরা এই নদীপথে লঞ্চযোগে ঢাকা থেকে অল্প খরচে মালামাল আনা-নেওয়া করতাম। চর জেগে ওঠায় এখন আর পয়সারহাট বন্দরে লঞ্চ আসতে না পারায় বেশী খরচ দিয়ে সড়ক পথে মালামাল আনতে বাধ্য হচ্ছি।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের বলেন, পয়সারহাট সন্ধ্যা নদীতে জেগে ওঠা চরে ৮ হেক্টর জমিতে ৬৪ মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা রয়েছে। যা উপজেলার খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় উৎপাদনে ওই কৃষকরা ভূমিকা রাখবে। আমি শীঘ্রই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চরে চাষ করা ওই কৃষকদের নিয়ে একটি উঠান বৈঠক করবো।
এএলএস/এমআর