কলাপাড়া(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
শেষ হয়েছে পায়রা বন্দরের ক্যাপিট্যাল ড্রেজিংয়ের কাজ। খননকৃত চ্যানেল আজ ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবে বেলজিয়ামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘জান ডি নুল’। এরফলে লাইটার জাহাজের সাহায্য ছাড়াই বন্দরের জেটিতে সরাসরি পণ্য খালাস করতে পারবে মাদার ভ্যাসেল।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয় পায়রা বন্দরের ক্যাপিট্যাল ড্রেজিংয়ের কাজ। সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের কাজ টানা দুই বছর ড্রেজিং চলার পর শেষ হচ্ছে। এতে রামনাবাদ চ্যানেলে ১০ দশমিক ৫মিটার গভীরতা তৈরি হয়েছে। এরফলে তিন হাজার কন্টেইনারবাহী জাহাজ বা ৪০হাজার ডেডওয়েট টন কার্গো চলাচল করতে পারবে। পায়রা বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের কাজ সম্পন্নের মাধ্যমে পোর্টটি আরো বেশি ভায়েবল হবে। বড় বড় জাহাজ আসবে। ইনার ও আউটারবারে মার্কিং, বয়াবাতি বসানো হয়েছে। ইনারবারে ১৫টি জাহাজ রাখা যাবে। সেখানে লোডিং-আনলোডিং কার্যক্রম চলবে। ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাটি দিয়ে এক হাজার একর জমি ভরাট করা হয়েছে। ক্যাপিট্যাল ড্রেজিং এর কাজ শেষে হলেও চ্যানেলের নাব্য ধরে রাখতে মেইনটেনেন্স ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হবে। যা ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত চলবে।
পুরোদমে এগিয়ে চলছে লালুয়ার চারিপাড়ায় বন্দরের প্রথম জেটির কাজ। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে এর ৮০ শতাংশ কাজ। বাকী ২০ ভাগ কাজ চলতি বছরের মে মাসে সম্পন্ন হলে বন্দরের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে পায়রা বন্দরে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ভিড়বে। এ সপ্তাহে আরো সাতটি জাহাজ আসবে। দেশের তৃতীয় এই সমুদ্র বন্দর পুরোপুরি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলসহ সমগ্র দেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসবে।
সীমিত অবকাঠামো নিয়ে চালু হওয়া দেশের এই তৃতীয় সমুদ্র বন্দর গত সাড়ে ৩বছরে রাজস্ব আয় করেছে ৬৭ কোটি ৭৫ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা। আর কাস্টস খাতে আয় করেছে ৬৭৯ কোটি ৩০ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা।
পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল জানান, ড্রেজিংয়ের ফলে ১০ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার চ্যানেল সৃষ্টি হয়েছে। যা দেশের অন্য সব বন্দরের চেয়ে বেশি গভীর। এবারের স্বাধীনতা দিবসে পায়রা বন্দর বড় একটি অর্জন করতে যাচ্ছে। পায়রা বন্দরের অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিগ্রস্থ ৪ হাজার ২’শ পরিবারের একজনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তারা ম্বাবলম্বী হচ্ছেন।
পটুয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান মহিব জানান, পায়রা বন্দর ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলে উন্নয়নের মহা কর্মযজ্ঞ চলছে। পায়রা বন্দর আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এটা আমাদের জন্য বড় পাওয়া। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। কোন বাঁধা বিপত্তিই পায়রা বন্দরকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। বন্দরটি দেশের অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দক্ষিনাঞ্চলবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
জেআর/এমআর