ছাতক(সুনামগঞ্জ) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা আব্দুর রহমান ও ছাতক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম মিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির, নতুন শিক্ষক নিয়োগ ও পছন্দের বিদ্যালয়ে পোষ্টিং দেয়ার নামে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়মের নানা তথ্য প্রমান দিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা আব্দুর রহমান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকতা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম মিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় ।
জানাযায়, গত ২২ জানুয়ারি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে সহকারি শিক্ষক নিয়োগ পরিক্ষা ২০২০ইং এর প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকে নিয়োগপ্রাপ্ত ৯৫জন শিক্ষক যোগদান করেছেন। পছন্দের বিদ্যালয়ে পদায়নের জন্য প্রতি শিক্ষককে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা করে একটি সিন্ডিকেট চত্রেুর মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন। অনেক প্রার্থী কাকুতি মিনতি করেও বাড়ির পাশের বিদ্যালয়ে টাকা না দেয়ায় কারনে যেতে পারেননি এবং কিছু প্রার্থীদের দুরের বিদ্যালয়ে প্রেরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের ম্যানেজ করে এসব টাকা প্রদানে বাধ্য করা হয়।
এখানে বৌলা, ভাসখালা, আন্দারীগাও, মুক্তিরগাও, রাজাপুর, গদারমহল, করছা, বুড়াইরগাও, রামপুর, চেচান, বিলপাড়, বেরাজপুর, পরশপুর, জয়নগর, মোহনপুর, কুচবাড়ি, আব্দুল জব্বার, নোয়াগাও, হাদাচানপুর, চাইরচিরা, চরচৌলা, শাখাইতি, নানশ্রীসহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে প্রার্থীর বাছাই করা স্থানে পদায়ন করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে প্রায় ৯৫ জন শিক্ষক-অবিভাবকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করা হয়েছে বলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাছুম মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন নিযোগকৃত শিক্ষক ও অবিভাবকরা। এসব অনিয়মের নানা তথ্য প্রমান দিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা আব্দুর রহমান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকতা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম মিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় ।
আরোও জানাযায়, মাসুম মিয়া প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা (ভারপ্রাপ্ত) এর দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ১৮৫ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামত ও সংস্কারের নামে প্রায় কোটি টাকার কাজ করেছেন। এসব কাগজ-কলমে মেরামত হলে বাস্তবে এসব খোজে পাওয়া যায় না বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। কয়েকজন দুর্নীতিবাজ শিক্ষক দিয়ে একটি সিন্ডিকেট গঠন করেন দু’কর্মকতা। এসব দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের মাধ্যমে ঘুসের টাকা হাতিয়ে নেন তারা । অনেক শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে সবসময় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসেই বসে আড্ডা দিয়ে সময় পাড় করেন। এসব দেখার কেউ নেই। এদের মাধ্যমে একটি সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির করে ইতি মধ্যেই প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছেন দুজন কর্মকতার বিরুদ্ধে। ছাতক প্রাথমিক প্রায়-ই এই শিক্ষকদের নিয়ে রাত ৯/১০টার পর শিক্ষা অফিসের বাইরে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে ভিতরে বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করার অভিযোগ রয়েছে।
গত ২০ ফেরুয়ারি জেলা শিক্ষা কর্মকতা আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে ছাতকে শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষা সফরে শ্রীপুর যান শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ করেই। এ অনিয়মের ঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা ও ফাকিবাজ শিক্ষকরা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নজরে ধরা পড়েছেন। এ অনিয়মের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে জেলা শিক্ষা কর্মকতা বিভিন্ন স্থানে গোপনে ব্যাপক তৎপরতা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়ম দুর্নীতি গোপনে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে সচেতন মহলের দাবি।
এব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম মিয়া তার বিরুদ্ধে আনীতি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষা সফরে ঘটনা সত্য। এখানে শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং থাকায় এ বিষয়ে আলোচনা- সমালোচনা হচ্ছে। এখানে তার কিছুই করার নেই। জেলা থেকে সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পদায়ন করা হয়।
এব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা আব্দুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ নয়, খোলা রেখে শিক্ষা সফরে তিনি গেছেন।
এব্যাপারে সিলেটের প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগীয় অধিপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন জানান, শিক্ষা প্রতিষ্টানের পাঠদান বন্ধ রেখে শিক্ষকরা শিক্ষা সফরে যাবার কোন এখতিয়ার নেই । জেলা ও উপজেলার দু কর্মকতার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূবক আইনানুগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএমএল/এমআর