নেছারাবাদ (পিরোজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পিরোজপুরের নেছারাবাদে ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। রবিবার সকালে উপজেলার স্বরূপকাঠী সদর ইউনিয়নের অলংকারকাঠি মনি রাম (এম আর) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এলাকার সর্বস্তরের জনগন আয়োজিত ওই মানববন্ধনে বিদ্যালয়ের অভিবাবক, শিক্ষার্থী, নিয়োগ প্রার্থীসহ এলাকার নানা শ্রেনীপেশার মানুষ অংশ নেয়। ঘন্টাব্যাপী ওই মানববন্ধনে অংশনেয়া লোকজন বিদ্যালয়ের নিয়োগে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদসহ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ এবং ম্যানেজিং কমিটি বাতিলের দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করে।
এসময় এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্যে নিয়োগে অংশগ্রহনকারী প্রার্থী স্বপন শীল অভিযোগ করে বলেন, আমি ওই বিদ্যালয়ের নিয়োগে পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে প্রার্থী ছিলাম। আমাকে নিয়োগ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মাহফুজুর রহমান আমার কাছ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা নিয়েছেন। আমি ওই টাকা এনজিও থেকে সুধে ঋন নিয়ে সভাপতিকে দিয়েও চাকরি পাইনি। সভাপতির সাথে টাকা-লেনদেনের বিষয়ে মোবাইলের কল রেকর্ড আমার কাছে আছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে আবেদনকারী আরেক প্রার্থী সৌরভ সিকদার অভিযোগ করে বলেন, আমাকে নিয়োগের কথা বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শংকর কুমার বড়াল আমার বাবার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়েছেন। নিয়োগে মৌখিক পরীক্ষায় প্রধান শিক্ষক আমাকে প্রশ্ন করেন আমি গাছে উঠতে পারি কিনা। কিন্তু আমার থেকে বেশী টাকা নিয়ে হাসনা বানু নামের এক প্রার্থীকে তারা নিয়োগ দিয়েছেন। সৌরভের পিতা শংকর বলেন, টাকা নেওয়ার পরেও ছেলের চাকরি কেন হলনা আমি প্রধান শিক্ষককে এমন প্রশ্ন করলে উপরের চাপে এই নিয়োগ হয়েছে বলে তিনি আমাকে জানিয়েছেন। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য সুমিত মজুমদার রাজু অভিযোগ করেন, নিয়োগে আমার স্ত্রী মিতালী হালদার ও ভাই সজিব মজুমদার অফিস সহায়ক পদে আবেদন করে। নিয়োগ পরীক্ষায় তারা দুজনেই ভালো ফলাফল করায় তাদেরকে বাদ দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে ওই পদে নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।
সভায় নিয়োগ বাতিলের দাবি করে আরও বক্তব্য রাখেন, ইউপি সদস্য দেব কুমার সমদ্দার ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা পরিবারের সদস্য রবিন্দ্রনাথ মজুমদার প্রমুখ। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শংকর কুমার বড়াল গাছে ওঠার প্রশ্ন করেছেন স্বীকার করে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মাহফুজুর রহমানের সাথে কথা বললে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিয়োগে কোন দুর্নীতি হয়নি। পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং অফিস সহায়ক পদে উপযুক্ত প্রার্থী না পাওয়ায় স্থগিত রাখা হয়েছে। কল রেকর্ডের জবাবে তিনি বলেন, আমার ভয়েস নকল করে এসব সাজানো হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, পরীক্ষায় কোন অনিয়ম হয়নী। ভিতরে যদি কেহ লেনদেন করে থাকেন সে ব্যপারে আমি অবগত নই।
উল্লেখ্য গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিনটি পদের অনুুকুলে ৩০ জন প্রার্থী আবেদন করলেও পরীক্ষায় ১৭ জন প্রার্থী অংশ গ্রহন করে।
আরএ/এমআর