আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল নিয়ে আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্ধ দেখা দিয়েছে। দুই গ্রুপ আলাদা আলাদাভাবে দোয়া অনুষ্ঠান ও মিছিল করায় ক্ষুব্ধ তৃণমুল নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে দুই গ্রুপের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ¦ গোলাম ছরোয়ার ফোরকানের অভিযোগ সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান কেন্দ্রিয় নেতাদের নির্দেশ উপেক্ষা করে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ছাড়াই এককভাবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের কোন নির্দেশনা নেই। আর আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের কোন নির্দেশনা উপেক্ষা করেনি। দুগ্রুপের এমন কর্মকান্ড ও দ্বন্ধে ক্ষুদ্ধ তৃণমুল নেতাকর্মীরা। দ্রুত এ দ্বন্ধের অবসান চান তারা।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে পুনঃনির্বাচন আগামী ১৬ মার্চ। এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাড. এমএ কাদের মিয়া। রবিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগ দলীয় কার্যালয়ে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কিন্তু আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাড. এমএ কাদের মিয়া দলীয় কার্যালয়ের দোয়া এ অনুষ্ঠানে যোগদান দেয়নি। উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ¦ গোলাম ছরোয়ার ফোরকান দলীয় কার্যালয়ে দোয়া অনুষ্ঠান শেষে নৌকার পক্ষে শতাধীক নেতাকর্মীসহ মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করেছেন। অপর দিকে সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। ওই দোয়া অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী এমএ কাদের মিয়া অংশ নিয়ে মেয়র মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। দুই গ্রুপ আলাদা আলাদা ভাবে মিছিল ও দোয়া অনুষ্ঠান করায় সাধারণ মানুষ ও তৃণমুল নেতাকর্মীদের মাঝে ধু¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। দুগ্রুপের এমন কর্মকান্ডে দ্বিধাবিভক্ত ও ক্ষুদ্ধ তৃণমুল নেতাকর্মীরা। দ্রুত এ দ্বন্ধের অবসান চান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন তৃণমুল নেতাকর্মীরা বলেন, আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে দোয়া অনুষ্ঠানে দলীয় কার্যালয়ে এসেছিলাম কিন্তু প্রার্থী নিজেই দোয়া অনুষ্ঠানে আসেনি। দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে প্রার্থী ছাড়াই নৌকা পক্ষে মিছিল করেছি।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক জিএম ওসমানী হাসান বলেন, কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতাদের সিদ্ধান্ত মতে দলীয় কার্যালয়ে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। কিন্তু দলীয় প্রার্থী দোয়া অনুষ্ঠানে যোগ দেয়নি। তিনি আরো বলেন, প্রার্থী না আসলেও দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে নৌকার পক্ষে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে মিছিল করেছি।
আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাড. এমএ কাদের মিয়া বলেন, দলীয় কার্যালয়ে দোয়া অনুষ্ঠানের আমন্ত্রন পেয়েছি কিন্তু নিজের কিছু ব্যক্তিগত কাজে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারিনি।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাবেক সহ-সভাপতি পৌর মেয়র মোঃ নাজমুল আহসান নান্নু বলেন, সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা উপেক্ষা করে দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি করতেই আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ছাড়া মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ¦ গোলাম ছরোয়ার ফোরকান বলেন, সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ছাড়াই এককভাবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন এবং দলীয় কার্যালয় আয়োজিত দোয়া অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাড. এমএ কাদের মিয়াকে অংশ নিতে দেয়নি।
সাবেক আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, যারা দলীয় কার্যালয়ে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন তারা শুরু ফেইজবুক ও সেলফির মধ্যেই কার্যক্রম শেষ করেছে। আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে দোয়া অনুষ্ঠান শেষে দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের কোন নির্দেশনা নেই। আর আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের কোন নির্দেশনা উপেক্ষা করেনি।
এমএইচকে/এমআর