ঢাকা সাগরকন্যা অফিস ॥
দলমত নির্বিশেষে সব মানুষের জন্য বর্তমান সরকার কাজ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে টানা তৃতীয়বার সরকার গঠনের সুযোগ পেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা আমাদের ভোট দিয়েছেন এবং যারা ভোট দেননি, সবাইকে ধন্যবাদ। দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমরা সবার তরে সবার জন্য কাজ করে যাবো। শনিবার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তৃতাকালে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় উদযাপনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জনগণ আমাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছেন। আমরা যেহেতু সরকার গঠন করার সুযোগ পেয়েছি, জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি, আমরা সবার তরে সবার জন্য কাজ করবো। জনগণের ভোটের সম্মান যেন থাকে সেটা আমাদের নির্বাচিতদের মনে রাখতে হবে। আমরা সুষম উন্নয়ন করে যাবো, জনগণের স্বার্থে কাজ করে যাবো। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এ রায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, এ রায় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে রায়। এ রায় অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রার। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রতি রায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে গড়ে তোলার রায়।
দেশের জনগণ ও তরুণ প্রজন্ম আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমরা সে ল্েয কাজ করবো। আরও আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবার সহযোগিতা চান চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া শেখ হাসিনা। বেলা ৩টার পরপরই শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে স্লোগানে স্লেগানে তাকে স্বাগত জানান আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী সমর্থকরা। উদ্যানের ভেতরে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আদলে তৈরি করা হয় ‘বিজয় মঞ্চ’, তার পেছনের ব্যানার সাজানো হয় দলের এবারের ইশতেহারের মলাটের রঙে। বৈঠাসহ ছোট বড় ৪০টিরও বেশি নৌকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত ফেস্টুনে সাজানো হয় সমাবেশ মাঠ।
মঞ্চে শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, সাহারা খাতুন, ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, দীপু মনি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের নেতা ও মন্ত্রিপরিষদের বেশিরভাগ সদস্য মঞ্চে ছিলেন। জনসভার কারণে সকাল ১১টা থেকে শাহবাগের রূপসী বাংলা সিগন্যাল, কাঁটাবন মার্কেট মোড়, নীলতে মোড়, চানখাঁরপুল, জিপিও ও মৎস্য ভবন মোড় থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। জনসভায় যোগ দিতে সকাল ৯টায়ই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখী মিছিল দেখা যায় ঢাকার নানা স্থানে। বাংলা একাডেমির বিপরীত দিক দিয়ে উদ্যানে ঢোকার পথে ছিল দীর্ঘ সারি। জয় বাংলা’ স্লোগানের সঙ্গে ঢাক-ঢোলের বাদ্যে মুখর এই নেতা-কর্মীদের দুপুরে মাতিয়ে তোলেন জনপ্রিয় সব সঙ্গীত শিল্পী। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রফিকুল আলমের পাশাপাশি কণ্ঠ মেলান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া মমতাজও।
এছাড়াও গান গেয়ে শোনান ফকির আলমগীর, জানে আলম, পথিক নবী, আঁখি আলমগীর, সালমা। ব্যান্ড দল জলের গানও তাদের পরিবেশনা নিয়ে আসে এই উৎসবে। গানে গানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বন্দনা যেমন ছিল, তেমনি ছিল গত এক দশকে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ের কথাও।
এফএন/কেএস