আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
হলুদের সামরোহে মাঠ। চারিদিকে সবুজ আর হলুদে ঘেরা মাঠের পর মাঠ। প্রকৃতি প্রেমিরা মাঠের পাশে দাড়িয়ে প্রকৃতির নয়নাভিরাম দৃশ্য অবলোকন করছেন। কৃষকরা পতিত জমিতে লবন সহিষ্ণ উচ্চ ফলনশীল সরিষা চাষে করছেন। সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা পুষ্টিকর তেল পেতে সরিষা চাষে ঝুঁকেছেন।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় এ বছর সরিষা চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫০ হেক্টর। এর মধ্যে ১৫ হেক্টর পতিত জমি। লবনাক্ততার কারনে ওই জমি দীর্ঘদিন ধরে পতিত ছিল। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ওই পতিত জমিতে কৃষকরা লবন সহিষ্ণ জাতের বিনা সরিষা-৯ চাষ করেছেন। এছাড়াও তিন ’জাতের উচ্চ ফলনশীল বিনা-৪, বারি সরিষা-১৪ ও বারি সরিষা-১৫ বেশী চাষ করেছে কৃষকরা। অগ্রহায়ন মাসের শুরুতে কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল সরিষা চাষ করে। তিন মাসের মধ্যে সরিষার ফলন আসে। মাঘ মাসের শেষে কৃষকরা সরিষার ফলন কর্তণ শুরু করবে। তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা পুষ্টিকর তেল পেতে সরিষা চাষে ঝুঁকেছেন বলে জানান উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ বাবুল মিয়া।
ঘটখালী গ্রামের কৃষক মোঃ মহসিন হাওলাদার বলেন, গত ১০ বছর ধরে আমার এক একর জমি পতিত ছিল। লবনাক্ততার কারনে ওই জমিতে ফসলতো দুরের কথা ঘাসও হতো না। ওই জমিতে এ বছর লবনাক্ত সরিষা চাষ করেছি। বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করি নিজের তেলের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করে ভালো লাভবান হব। তিনি আরো বলেন. উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও তাদের দেয়া লবন সহিষ্ণ বীজ আবাদ করেছি।
একই গ্রামের কুদ্দুস মোল্লা বলেন, গত বছর ৩৩ শতাংশ জমিতে সরিষা চাষ করেছিলাম। ভালো ফলন হওয়ায় এ বছর ৭০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছি। গত বছর পাঁচ মণ সরিষা পেয়েছি। ওই সরিষা ভেঙ্গে পুরো বছরের খাবার তেল রেখেছি। আর খইর (ভুসি) পানের বরজ ও গরুর খাবার হিসেবে ব্যবহার করেছি। সরিষা চাষ অনেক লাভজনক।
একই গ্রামের বাদল হাওলাদার ও আল-আমিন বলেন, পতিত জমিতে সরিষা চাষ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। তারা আরো বলেন, আশা করি পরিবারের তেলের চাহিদা পুরন করে বেশ ভালো লাভবান হতে পারবো।
চালিতাবুনিয়া গ্রামের মহিউদ্দিন মাতুব্ব্র বলেন, এ বছর উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা চাষ করেছি। এর আগে সরিষা চাষ করিনি। ভালো ফলন হয়েছে।
শনিবার উপজেলার আমতলী সদর, চাওড়া, হলদিয়া, গুলিশাখালী ও আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখাগেছে, সরিষার খেত হলুদ আর সবুজে ভরে গেছে। প্রকৃতি প্রেমিরা মাঠের পাশে দাড়িয়ে মনের আনন্দে ছবি তুলছেন।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন , পতিত জমিতে লবন সহিষ্ণ বিনা সরিষা -৯ চাষ করেছেন কৃষকরা। ফলনও ভালো হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর কৃষকরা সরিষা চাষে বেশী ঝুঁকেছেন। তিনি আরো বলেন, এ বছর পতিত জমিসহ ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে।
এমএইচকে/এমআর