সঞ্জয় ব্যানার্জী, দশমিনা (পটুয়াখালী) থেকে॥
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার দশমিনা সদর ইউনিয়নের কৃষক মোঃ খলিল বয়াতী ১০ লক্ষ টাহা খরচ কইর্যা ১০ একর জমিতে ও মাহাবুল হোসেন জানান, ৫ লক্ষ টাহা খরচ কইর্যা ৬ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলেন। কয়েক দিনের অতি বৃষ্টির পানিতে সব শ্যাষ অইয়্যা গ্যাছে। কি দিয়া মানষের ঋণ শোধ করমু, সংসার চালামু হেই চিন্তায় ঘুম নাই। কৃষকের দাবি সরকারের কাছে আমাগোরে বাঁচান। অতিবর্ষণে দশমিনার তরমুজসহ রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানি জমে তরমুজ, মুগডাল, খেসারী ডাল, মিষ্টি আলু ও চিনাবাদাম গাছ পঁচে গেছে।
দশমিনা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এ বছর তরমুজ ৪শ’ ৫০ হেক্টর, মুখডাল ১৩ হাজার হেক্টর, খেসারী ডাল ৭শ’ হেক্টর ও বাদাম ৮শ’ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলেও অতিবর্ষণের কারণে ওই জমির ফসল কৃষকরা ঘরে তুলতে পারেনি। ঘরে তোলার পূর্বেই খেসারী, মূগডাল নষ্ট হয়ে গেছে। তরমুজ ও চিনাবাদামের ক্ষেতে পানি জমে গাছ পঁচে গেছে। ওই বৈরী আবহাওয়া গত কয়েক দিন স্থায়ী ছিল সাথে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। ওই সময় তরমুজসহ রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কৃষকরা ওই ক্ষতি কিছ্টুা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করলেও সোমবার রাত থেকে মুষলধারে বৃষ্টিতে তরমুজ, মুগডাল, খেসারী ডাল ও চিনাবাদামের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে রবি শস্য রক্ষা করার কোন সম্ভাবনা রইল না। এতে কৃষকের ক্ষতি হবে বলে জানান কৃষকরা।
বহরমপুর ইউনিয়নের বগুড়া গ্রামের কৃষক মোঃ নশা মিয়া তালুকার ও মোঃ ইউনুছ তালুকদার জানান, বৃষ্টির পানিতে তরমুজ ক্ষেত তলিয়ে সব পঁচে গেছে। এতে আমাদের পাঁচ/আট লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
দশমিনা ইউনিয়ানের গোলখালী গ্রামের তরমুজ চাষি মোঃ খলিল বয়াতী ১০ একর জমিতে ১০লক্ষ টাকা খরচ করে আর একই গ্রামের মাহাবুল হোসেন ৫ লক্ষ টাকা খরচ করে ৬ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলাম। বৃষ্টির পানি জমে ক্ষেতের সব তরমুজ গাছ পঁচে গেছে।
বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিন দাসপাড়া গ্রামের সংকর চন্দ্র শীল জানান, ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে ৩ একর জমিতে মুগডাল, খেসারী ডাল, বাদাম, মরিচ ও মিষ্টি আলুর চাষ করেছিলাম। বৃষ্টিতে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। তিনি আরো জানান, ফসলতো শেষই এখন ওই জমি পরিষ্কার করতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হবে। মঙ্গলবার ও বুধবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলায় বাঁশবাড়িয়া, বহরমপুর, চরবোরহান, আলীপুর, বেতাগী সানকিপুর ও রনগোপালদীসহ বিভিন্ন এলাকা বৃষ্টির পানিতে ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। পানির নিচে রবি শস্যের গাছগুলো ডুবে আছে।
দশমিনা উপজেলা কৃষি অফিসার বনি আমিন খান বলেন, অতিবর্ষণে রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে কৃষকের ঘুরে দাঁড়ানোর কোন সম্ভাবনা নেই। এতে উপজেলায় কৃষকের প্রায় ১০/১২ % ক্ষতি হবে। তিনি আরো বলেন, ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।