কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
পটুয়াখালীর মহিপুরে জমির দলিল এক মৌজায় ভোগ করছেন অন্য মৌজায়। জাল জালিয়াতির দলিল সৃস্টি করে ৭একর জমি জোরপূর্বক ভোগদখলের অভিযোগ উঠেছে সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ ইউসুফ আলী গংদের বিরুদ্ধে। জমির প্রকৃত মালিকরা গরীব ও অসহায় হওয়ায় তাদেরকে মারধর, হুমকিসহ নানা রকম ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। স্থানীয় শালিস মিমাংসা মানছে না। আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় জমি বিক্রি ও জবরদখলে অসহায় হয়ে পরেছে জমির প্রকৃত মালিক ইসমাইল সিকদার গংরা। থানায় অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছে না এমনটাই দাবী করলেন ভূক্তভোগি ওই পরিবারটি। জমি উদ্ধারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও ভূমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জেএল ২৫নং নিজামপুর মৌজার সিএস ৪৭১ নং খতিয়ানের ৭.০৭ একর জমির মালিক আরব আলী মাতুব্বর। পরবর্তীতে আরএস জরিপে ১৩০ নং খতিয়ানে তার নামে ৪.৩৮ একর জমির রেকর্ড হয়। এরপর আরব আলী মাতুব্বর পরলোকগমন করলে আলীহোসেন মাতুব্বর, বিবিশন বিবি ও লালভানু বিবি ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়। উল্লেখিত আলীহোসেন মাতুব্বর ও লাল ভানু বিবি’র লোকান্তরে ওয়ারিশ সূত্রে সম্পত্তির মালিক হন আ.মালেক মাতুব্বর, রাহিমা বেগম, সুফিয়া বেগম, নূরইসলাম ও ফুলভানু বিবি। কিন্তু তাদের নামে এসএ রেকর্ড হয়নি। হাল রেকর্ড সংশোধনের জন্য জমির প্রকৃত ওয়ারিশগণ বিগত ২০১১ সালে দুইখানা আম-মোক্তারনামা দলিল মূলে বিবিশন বিবি’র পুত্র মো.ইসলাম সিকদারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। ইসমাইল সিকদার আম-মোক্তারনামা দলিল মূলে ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়ে হাল রেকর্ড সংশোধনের জন্য জমির অবৈধ দখলদার মো.ইউসুফ আলী গংদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে পটুয়াখালী যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে ১৬৮ নং দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞাদালত উভয় পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে অস্থায়ী স্থিতাবস্থা জারি করেন। মামলাটি বর্তমানেও আদালতে চলমান আছে। এদিকে ইউসুফ আলী গংরা গত বছরের মার্চ মাসে আদালতে চলমান মামলার নিস্পত্তি হবার পূর্বে কিছু জমি অন্যত্র হস্তান্তর করেছেন এবং বাকী জমি দখলে নেয়ার জন্য মাটি কেটে জমির আকার আকৃতি পরিবর্তন করে দু’টি টিনশেট ঘর নির্মাণ করেছেন। ঘর উত্তোলনের সময় ইসমাইল সিকদার গংরা বাধা দিতে গেলে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা তাদের ব্যাপক মারধর করেন। তখন ইসমাইল সিকদার মহিপুর থানায় একটি মামলা করেন।
এদিকে ইউসুফ আলী গংরা জমির মূল মালিক আরব আলী মাতুব্বর’র নিকট থেকে ক্রয়সূত্রে জমি দাবি করে বিগত ১৯৪২ সনের ৯জুন তারিখের ৫৯১ নং একটি সাব কবলা দলিল আদালতে দাখিল করেছেন। ইসমাইল সিকদার দাবি করছেন ৫৯১ নং সাব কবলা দলিলটি জালজালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে। কারণ ৫৯১ নং দলিলে আরব আলী মাতুব্বরকে দাতা দেখানো হলেও রেকর্ডরুমে তল্লাসিতে দেখা যায় একই সালের ৫৯১ নং দলিলের দাতা মৌলভী নুরুল হক, ক্রেতা ফজিমদ্দীন বেপারী। ইসমাইল সিকদার আরও দাবি করেন, ইউসুফ আলী গংদের দাখিলকৃত দলিলের মৌজা ইছাপুর, দাগের সাথে এ অঞ্চলের কোন মিল নেই। তারা গায়ের জোরে নিজামপুর মৌজায় আমার জমি ভোগদখল করছেন।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত মহিপুরের সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ ইউসুফ আলী বলেন, দীর্ঘ ৮০ বছর যাবৎ এ জমি তাদের ভোগদখলে আছে। এসএ ও বিএস রেকর্ড আমাদের নামে হয়েছে। এত বছর কোন মালিক ছিলো না। হঠাৎ করে ইসমাইল সিকদার গংরা জমির মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা করেছেন। আদালত বিচার করবেন জমি কার। আমরা ইসমাইল সিকদার গংদের কোন ভয় ভীতি বা হুমকি ধমকি দিচ্ছি না।
কেএস/এমআর