মেহেরপুর সাগরকন্যা প্রতিনিধি ॥
মেহেরপুরে অনেকগুলো বিয়ে করায় স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে দিয়েছেন এক স্ত্রী। ৩০ বছরের সংসার জীবনে ছয়টি বিয়ে করেছেন ওই ব্যক্তি। কোনো স্ত্রীকেই ভাত-কাপড় দেননি তিনি। বিয়ের কিছুদিন পরই শুরু করতেন অমানুষিক নির্যাতন। বহু বিয়ের এ খল নায়কের বিচার করতে করতে গ্রামের মেম্বর থেকে শুরু করে গ্রাম প্রধানরা ছিলেন অতিষ্ট। আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনী পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) পর্যন্ত তার বিচার করেছে কয়েকবার। তারপরেও তাকে শাসন করা যায়নি। অবশেষে তিনি নিজেই শাস্তি দেয়ার প্রস্তুতি নেন। সিদ্ধান্ত নেন আবার বিয়ে করলেই তার পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলার। যেই সিদ্ধান্ত সেই কাজ। চার দিন আগে স্বামী রঞ্জিত মিয়া পার্শ্ববর্তী চরগোয়ালগ্রামের পানছুরা বেগমকে বিয়ে করেন। এটা তার ছয় নম্বর বিয়ে। গত শুক্রবার রাতে কৌশলে স্বামীকে ঘরে ডেকে এনে ব্লেড দিয়ে পোঁচ দেন পুরুষাঙ্গে। এ সময় চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে রঞ্জিত মিয়াকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এভাবেই ঘটনা এবং স্বামীর জীবন কাহিনি বর্ণনা করেন পুলিশের হাতে আটক প্রথম স্ত্রী খোঁসজান নেছা। ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার শেষ রাত ৩টার দিকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজীপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পাড়ায়।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা বিডি দাশ পিকলু জানান, রঞ্জিত মিয়ার পুরুষাঙ্গের ৯৫ ভাগ কেটে গেছে। প্রাথমিকভাবে সেটি সেলাই দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য মেহেরপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার তৃতীয় স্ত্রী কমেলা খাতুন।
স্থানীয় ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই আক্তারুজ্জামান জানান, ঘটনার পর রাতেই রঞ্জিত মিয়ার প্রথম স্ত্রী খোঁসজান নেছাকে আটক করা হয়েছে। স্থানীয় কাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বর) আনারুল ইসলাম জানান, ৩০ বছর সংসার জীবনে তিনি ছয়টি বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রী খোঁসজান নেছা, দ্বিতীয় স্ত্রী লিপিয়ারা খাতুন, তৃতীয় স্ত্রী কমেলা খাতুন, চতুর্থ স্ত্রী যশোরের আনজিরা খাতুন, পঞ্চম স্ত্রী কহিজান নেছা ও শেষ স্ত্রী চরগোয়ালগ্রামের পানছুরা কাতুন। রঞ্জিত মিয়া পেশায় একজন মুরগি ব্যবসায়ী। হাতে কিছু টাকা পয়সা পেলেই তিনি বিয়ে করেন। কমেলা খাতুন বলেন, আমাকে বিয়ে করেছেন আটাশ বছর আগে। আমার এক ছেলে রয়েছে। আমাকে নাবালক ছেলেসহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমি লোকের বাড়িতে কাজ করে, ছাগল-গরু চরিয়ে, লোকের বাড়ি ধান্দা করে জীবন কাটিয়েছি।
এফএন/কেএস