আমতলী-পুরাঘাটা খেয়া পারাপারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়!

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলী-পুরাঘাটা খেয়া পারাপারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়!
মঙ্গলবার ● ২৭ ডিসেম্বর ২০২২


---আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

রাত হলেই তিনগুন ও সকালে দ্বিগুন খেয়া ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইজারাদার মোঃ সিদ্দিুকর রহমান গাজীর খেয়াঘাট পরিচালক আলহাজ¦ আব্দুল মজিদ খাঁন প্রভাব খাটিয়ে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশী ভাড়া আদায় করছেন। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী শত শত মানুষের। প্রতিদিন যাত্রীদের অহেতুক হয়রানী করে থাকেন বলে আরো অভিযোগ তাদের। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ইজারাদার মোঃ সিদ্দিকুর রহমান গাজী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যেহেতু আমি ঘাটে থাকি না।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলা ও বরগুনা জেলা শহরের সীমান্তবর্তী বৃহৎ পায়রা (বুড়িশ^র) নদী। এ নদীর খেয়া পাড় হয়ে প্রতিদিন আমতলীসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ৫ হাজার মানুষ বরগুনা জেলা শহরে যাতায়াত করেন। বরগুনা জেলা পরিষদ ২০২১-২২ অর্থ বছরে পায়রা- পুরাকাটা খেয়াঘাটের দরপত্র আহবান করেনি। ফলে প্রতিমাসে জেলা পরিষদ ইজারা দিয়ে থাকেন। এ মাসে ইজারা পেয়েছেন ঠিকাদার মোঃ সিদ্দিকুর রহমান গাজী। প্রতিদিন ১০ টি টলারে করে মানুষ পারাপার করেন ইজারাদারের পরিচালক আলহাজ¦ আবদুল মজিন খাঁন। জেলা পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত জনপ্রতি ১৫ টাকা ভাড়া হলেও নিয়মিত ২০ টাকা ভাড়া আদায় করছেন। অভিযোগ রয়েছে রাত হলেও পরিচালক মজিদ খাঁন জনপ্রতি ৫০-৬০ এবং খুব সকালে ৩০-৪০ টাকা আদায় করেন। বেশী টাকা আদায়ের বিষয়ে প্রতিবাদ করলেই যাত্রীদের উপর নেমে আসে মানষিক নির্যাতন। গত এক মাসে অন্তত অর্ধশত যাত্রী খেয়াঘাট পরিচালক ও তার লোকজনের মানষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। প্রতিদিনই এভাবে যাত্রীদের হয়রানী করে আসছেন খেয়াঘাট সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া ধারন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের অভিযোগ রয়েছে পরিচালকের বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, প্রতিনিয়ত খেয়াঘাটে এমন ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উল্টো প্রশাসন তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন।
রাসেল নামের এক যাত্রী বলেন, গত বুধবার ভাড়া নিয়ে তার সাথে তর্ক হয়। ক্ষিপ্ত হয়ে ট্রলার মাঝি তার দিকে তেড়ে আসেন। মান ইজ্জতের ভয়ে মাঝির দাবীকৃত ভাড়া দিয়ে চলে এসেছি।
খেয়াঘাটের যাত্রী আব্দুল্লাহ আল মোমেন নিজাম, রুহুল আমিন, নুরুল হক, প্রাণেশ মন্ডল ও আরিফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার খুব সকালে বরগুনা যেতে পায়রা নদীর খেয়াঘাটে আসি। টলারের মাঝি খেয়ার যাত্রী তুলেই জনপ্রতি ৪০ টাকা ভাড়া দাবী করেন। আমিসহ কয়েকজন যাত্রী এর প্রতিবাদ করলেই ট্রলার মাঝি আমাদের সাথে অহেতুক তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং বাক-বিতন্ডে জড়িয়ে পরেন। মান ইজ্জতের ভয়ে বাধ্য হয়ে মাঝির দাবীকৃত টাকা দিয়ে এনেছি।
তালতলী উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপার ভাইজার গৌতম চন্দ্র ঘোষ বলেন, পায়রা নদীর আমতলী-পুরাঘাটা খেয়াঘাটে টলার মাঝি মোটর সাইকেলসহ আমার কাছ থেকে ৮০ টাকা ভাড়া নিয়েছেন।
পায়রা নদী খেয়াঘাটের পরিচালক আলহাজ¦ আব্দুল মজিদ খাঁন বেশী ভাড়া আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, ঘণ কুয়াশার কারনে টলার মাঝি ভাড়া বেশী নিতে পারে।
পায়রা-পুরাকাটা খেয়াঘাট ইজারাদার মোঃ সিদ্দিকুর রহমান গাজী বলেন, আমার নামে ইজারা ঠিকই কিন্তু পরিচালনা করেন আলহাজ¦ আব্দুল মজিদ খাঁন। আমি খেয়া ঘাটে যাই না। বেশী ভাড়া আদায় করে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন,  বেশী ভাড়া নেয়ার সুযোগ নেই। জেনে আইনানুগ  ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ জাহাঙ্গির কবির বলেন, বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, মানুষকে হয়রানী করে কিছুই করা যাবে না।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ০:১৪:১৩ ● ১৩৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ