আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
নেতার ভোটে নেতা নির্বাচন। আগামী ১৭ অক্টোবর বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনের আর মাত্র ৪ দিন বাকী। ওই নির্বাচনে সদস্য পদে আমতলী উপজেলায় চারজন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে টানতে জোর প্রস্তুতি চালাচ্ছেন। চায়ের টেবিলে ঝড় না উঠলেও সাধারণ মানুষের মাঝে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা চলছে। অভিযোগ রয়েছে ভোটারদের কাছে টানতে চলছে টাকার খেলা। দুই থেকে তিন লক্ষ টাকায় ভোট কেনার গুঞ্জন উঠেছে। কিন্তু প্রার্থীরা ভোট কেনার অভিযোগ অস্বীকার করছেন।
জানাগেছে, আগামী ১৭ অক্টোবর বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে সদস্য পদে আমতলী থেকে চার জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তারা হলেন অ্যাড. আরিফ-উল হাসান আরিফ, মোঃ আবুল বাশার নয়ন মৃধা, মোঃ নাশির হাওলাদার ও মোঃ আহুরুজ্জামান আলমাস খাঁন। উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১০৪ জন। এই ভোটারগণই নির্বাচিত করবেন জেলা পরিষদ নেতা। ভোটারদের কাছে টানতে প্রার্থীরা জোড় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে ভোটারদের কাছে টানতে চলছে টাকার খেলা। দুই থেকে তিন লক্ষ টাকায় ভোট কেনার গুঞ্জন উঠেছে। কিন্তু প্রার্থীরা ভোট কেনার অভিযোগ অস্বীকার করছেন।
তবে এবার ভোটাররা ভোট বিক্রিতে রাজি হচ্ছে না। কেননা গত নির্বাচনে ভোট বিক্রি করে ভোটাররা বিপাকে পড়েছেন। ভোট দিয়েও লাঞ্ছিত হয়ে টাকা ফেরত দিতে হয়েছে এমন অভিযোগ ভোটারদের। চারজন প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীর মধ্যে অ্যাড. আরিফ-উল হাসান আরিফ, মোঃ আবুল বাশার নয়ন মৃধা ও মোঃ নাশির হাওলাদার সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য। অপর প্রার্থী আহুরুজ্জামান আলমাস খাঁন গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করে হেরেছেন। চার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীর মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। এ চার প্রতিদ্বন্ধির মধ্যে অ্যাড.আরিফ-উল হাসান-আরিফের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য হিসেবে তার বিরুদ্ধে তেমন অভিযোগ নেই। সদালপি ও স্বজ্জন ব্যাক্তি হিসেবে তার রয়েছে ব্যাপক সুনাম। মোঃ আবুল বাশার নয়ন মৃধা ও নাশির হাওলাদারের বিরুদ্ধেও তেমন অভিযোগ নেই। অপর প্রার্থী মোঃ আহুরুজ্জামান আলমাস খাঁন গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে আবুল বাশার নয়ন মৃধার সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করে হেরেছেন। এ বছর জয়ের জন্য তিনি মরিয়া হয়ে কাজ করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভোটার বলেন, এক প্রার্থী দুই লক্ষ টাকায় ভোট কিনতে চাচ্ছে। কিন্তু এখনো মত দেইনি। নেতাদের মাধ্যমে লবিং চালাচ্ছেন। তারা আরো বলেন, এ বছর ভোট বিক্রি করবো না। গত বছর ভোট দিয়েও টাকা ফেরত দিতে হয়েছে।
আরেক ভোটার বলেন, ভোট দিয়েও রক্ষা পাইনি। নির্বাচিত হওয়ার কয়েকদিন পরে ডেকে নিয়ে লাঞ্ছিত করে টাকা আদায় করে নিয়েছেন।
কুকুয়া ইউপি সদস্য মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, টাকায় ভোট বিক্রি করলে সেই রকম মুল্যায়ন হয়। অতএব টাকায় ভোট বিক্রি করবো না। যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দেব। তিনি আরো বলেন, আমি প্রার্থী নয়ন মৃধার পক্ষে কাজ করছি।
হলদিয়া ইউপি সদস্য মোঃ সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, যোগ্য প্রার্থীকে ভোট নিয়ে নেতা নির্বাচিত করবো। আমি সদস্য প্রার্থী অ্যাড. আরিফ-উল- হাসান আরিফের পক্ষে কাজ করছি।
আমতলী পৌরসভা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর জিএম মুছা বলেন, নেতার ভোটে নেতা নির্বাচন বেশ মজার ব্যাপার। অ্যাড, আরিফ-উল হাসান আরিফ একজন ভালো মানুষ হিসেবে ব্যাপক সুনাম রয়েছে। তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবো।
জেলা পরিষদ সদস্য প্রার্থী অ্যাড,আরিফ-উল- হাসান আরিফ বলেন, গত পাঁচ বছর জেলা পরিষদ সদস্য হিসেবে মানুষের সেবা করেছি। অর্থের কাছে নিজেকে বিলিয়ে দেইনি। বরাদ্দমত ইউনিয়ন ভিত্তিক সমান ভাগ করে দিয়েছে। মানুষের পাশে থেকে সাধ্যমত সেবা করেছি। আশা করি ভোটাররা ভালো কাজের মুল্যয়ন করছে।
আবুল বাশার নয়ন মৃধা বলেন, তিন বছর জেলা পরিষদ সদস্য হিসেবে সুনামের সাথে মানুষের সেবা করেছি। আমার বিশ^াস ভোটাররা আমাকেই মুল্যায়ন করবেন।
এমএইচকে/এমআর