সাগরকন্যা আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
ভারতের কাশ্মির নীতির কঠোর সমালোচনা করে একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। গত শনিবার আবুধাবিতে সংস্থাটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। গত শুক্রবার ওআইসির সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যোগ দেওয়ার পরদিনই ওই প্রস্তাব অনুমোদন করে ৫৭ টি ইসলামিক দেশের জোট ওআইসি। এই প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, কাশ্মির ইস্যু একান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ। পাকিস্তানের আপত্তি সত্ত্বেও প্রথমবারের মতো এবারের ওআইসি সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। প্রতিবাদে সভায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যোগ না দিয়ে জুনিয়র কর্মকর্তাদের আবুধাবিতে পাঠান। সুষমার যোগ দেওয়ার পরদিন ওআইসির সভায় গৃহীত প্রস্তাবে ভারতের কাশ্মির নীতির কঠোর সমালোচনা করা হয়। বলা হয়, ২০১৬ সাল থেকে কাশ্মিরে ভারতীয় বর্বরতার তীব্রতা বেড়েছে। একই সঙ্গে অবৈধ আটক ও গুম বেড়েছে বলে জানানো হয় ওআইসির প্রস্তাবে।
ভারত নিরীহ কাশ্মিরিদের বিরুদ্ধে নির্বিচার বলপ্রয়োগ করছে বলেও অভিযোগ করা হয় ওআইসির প্রস্তাবে। ওআইসির গৃহীত প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কাশ্মির ইস্যুতে আমাদের অবস্থান সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সর্বজনবিদিত। আমরা আবারও নিশ্চিত করতে চাই যে জম্মু ও কাশ্মির ভারতের অবিভাজ্য অংশ এবং এটা ভারতের একান্তই নিজস্ব বিষয়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রোপটে গত শুক্রবার ওআইসির সভায় যোগ দিয়ে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওআইসি’র দেশগুলোকে এক যোগে কাজ করার আহ্বান জানান সুষমা স্বরাজ। তার ১৭ মিনিটের ভাষণে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি মানবতা রা করতে চাই, তাহলে অবশ্যই সন্ত্রাসীদের আশ্রয় ও অর্থ দেওয়া রাষ্ট্রগুলোকে সেসব দেশে থাকা সন্ত্রাসী আস্তানার অবকাঠামো ধ্বংস এবং অর্থায়ন বন্ধ করতে বলতে হবে।
সুষমা বরেন, আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসবাদ বিশ্বকে ভয়াবহ বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ এবং উগ্রবাদ ভিন্ন নাম এবং পথ অবলম্বন করে। তাদের ব্যবহৃত কারণগুলোও বহুমাত্রিক। সুষমার এই বক্তব্যের পরদিনই ওআইসির গৃহীত প্রস্তাবে ভারতের কঠোর নিন্দা জানানো হলেও আটক ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে ফিরিয়ে দেওয়ায় পাকিস্তানের প্রশংসা করা হয়। গত বুধবার ভারত-পাকিস্তান বিমান যুদ্ধের পর পাকিস্তানে আটক হন ওই ভারতীয় পাইলট। ওআইসির গৃহীত প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক কাশ্মির ইস্যুতে পাকিস্তানকে সমর্থন করে প্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।