গৌরনদী (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
গরুর ঘাস কাটার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বরিশালের গৌরনদীতে একটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে রামদা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে শুকুরন বেগম (৫০) নামে এক নারীকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ সময় হামলাকারীরা কুপিয়ে ও পিটিয়ে ৩ নারীসহ ৫ জনকে আহত ও একটি বসতঘর ব্যাপক ভাংচুর করেছে। বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের বংকুরা গ্রামে দুলাল বয়াতির বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় দুলাল বয়াতির স্ত্রী শিল্পী বেগম (৪০), বোন মিনার বেগম (৪০), ছেলে আবু হানিফ বয়াতি (২২), মেয়ে স্কুলছাত্রী মনিকা বেগম(১৫)কে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত শুকুরন উপজেলার বংকুরা গ্রারেম হারুন তালুকদারের স্ত্রী ও দুলাল বয়াতির বোন।
নিহতের স্বজন ও থানা পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার বংকুরা গ্রারেম সৌদি প্রবাসী বারেক বেপারীর জমির ঘাস কেটে নেওয়ার অপবাদে মঙ্গলবার সকালে দুলাল বয়াতি ও তার বোন শুকুরন বেগমের সঙ্গে বারেকের স্ত্রী রিনা বেগমের ঝগড়ঝাটি হয়। এরজের ধরে রিনা বেগম মঙ্গলবার স›ন্ধ্যার দিকে বাড়ির পাশে দুলাল বয়াতিকে পেয়ে জুতা পেটা করে। এ সয়ম উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ক্ষিপ্ত হয়ে রিনা বেগম প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তার (রিনা) মেয়ে জামাতা গৌরনদীর আশোকাঠিস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোডে আশা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পাটনার ও যুবলীগ কর্মী নাসির কাজীকে খবর দেয়। মেয়ে জামাতা নাসির কাজী ও তার ব্যবসায়ীক পাটনার উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা শজিবুর রহমান জিয়ার নেতৃত্বে ২০/২৫ ক্যাডার রামদা ও লোহার রড় নিয়ে বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে বংকুরা গ্রামে দুলাল বয়াতির বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা দুলালের বোন শুকুরন বেগম (৫০), মিনার বেগম (৪০), স্ত্রী শিল্পী বেগম (৪০), ছেলে আবু হানিফ বয়াতি (২২), মেয়ে স্কুলছাত্রী মনিকা বেগম(১৫)সহ ৬ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় দুলাল বয়াতির বসত ঘর ব্যাপক ভাংচুর করে তারা। আহতদের রাত ৮টার দিকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাথায় মারাত্মক জখমী শুকুরন বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাতিজা ও দুলাল বয়াতির ছেলে আবু হানিফ বয়াতি অভিযোগ করে বলেন, গরুর ঘাস কাটার অপবাদ ও হাতাহাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৌদি প্রবাসি বারেক বেপারীর স্ত্রী রিনা বেগম তার মেয়ে জামাতা যুবলীগ কর্মী নাসির কাজী ও ছাত্রলীগ নেতা শজিবুর রহমান জিয়াকে খবর দিয়ে এনে তাদের নেতৃত্ব ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী রামদাসহ দেশীয় ধারাল অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা েিনয় বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আমাদের বাড়িতে এ হামলা চালায়। এ ঘটনায় আমি (হানিফ) বাদি হয়ে ১৫ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার ভোররাতে গৌরনদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছি।
উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মাহাবুব আলম ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের ইসলাম সান্টু ভূইয়া জানান, এ হামলার ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোন নেতাকর্মী জড়িত নাই। একটি কুচক্রী মহল আমাদের দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এ অপপ্রচার চালাচ্ছে।
গৌরনদী থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, খবর পেয়ে থানা পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ থেকে নিহত শুকুরন বেগমের লাশ উদ্ধার করে রাতেই থানায় নিয়ে আসে। এরপর ময়না তদন্তের জন্য শুকুরনের লাশ আজ বৃহস্পতিবার সকালে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের ভাতিজা আবু হানিফ বয়াতি বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলার আসামিদের গ্রেফতারের জন্য থানা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে বলে ওসি আফজাল হোসেন জানান।
এআর/এমআর