সাগরকন্যা স্পোর্টস ডেস্ক ॥
তিন দিন আগে চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে হারের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার সুযোগ কাজে লাগাতে পারল না রিয়াল মাদ্রিদ। উল্টো সান্তিয়াগো সোলারির দলকে তাদেরই মাঠে হারিয়ে লিগ শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে বড় এক বাধা পেরিয়ে গেল বার্সেলোনা। সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে শনিবার রাতে লা লিগায় ১-০ গোলে জেতে এরনেস্তো ভালভেরদের দল। ম্যাচের শুরুর দিকে পার্থক্য গড়ে দেওয়া একমাত্র গোলটি করেন ইভান রাকিতিচ।
চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়ালের বিপে চারবারের দেখায় তিনটিতেই জিতল বার্সেলোনা, অন্যটি ড্র। আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মুখোমুখি লড়াইয়ে বার্সেলোনার এটি ৯৬তম জয়। রিয়ালের জয় ৯৫টি।
ঘরের মাঠে তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি রিয়াল। খেলায় ছিল না পরিকল্পনার ছাপ। বার্সেলোনার রণভাঙার মতো ফুটবল খেলতে পারেননি করিম বেনজেমা-গ্যারেথ বেলরা। অনেক দিন পর খেলার সুযোগ পাওয়া ইসকোও ছিলেন অনুজ্জ্বল।
লিগের প্রথম পর্বে গত অক্টোবরে লিওনেল মেসিকে ছাড়া খেলতে নেমে লুইস সুয়ারেসের হ্যাটট্রিকে রিয়ালকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বার্সেলোনা। ফেব্রুয়ারিতে কোপা দেল রে সেমি-ফাইনালের প্রথম পর্বে কাম্প নউয়ে দুদলের ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়। আর গত বুধবার ফিরতি লেগে মাদ্রিদের কাবটিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে কাতালান কাবটি। এবার আরও একটি জয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের উপর আধিপত্য আরও বিস্তার করল দলটি।
তিন দিন আগের কাসিকোয় নিষ্প্রভ থাকা মেসি এই ম্যাচের প্রথমার্ধেও ছিলেন অনুজ্জ্বল। প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগটি অবশ্য তার পা থেকেই আসে। ১৯তম মিনিটে সুয়ারেসের সঙ্গে একবার বল দেওয়া নেওয়া করে আর্জেন্টাইন তারকার শট গোলরককে পরাস্ত করলেও পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
২৬তম মিনিটে বের্নাবেউকে স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। সের্হি রবের্তোকে ছোট করে বল বাড়িয়ে দ্রুত সামনে এগিয়ে যান রাকিতিচ। সের্হিও রামোসকে পেছনে ফেলে ডান দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে ফিরতি পাস ধরে গোলরকের উপর দিয়ে বল ঠিকানায় পাঠান ক্রোয়াট মিডফিল্ডার।
বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার পর রিয়ালের বিপে এটি রাকিতেচের দ্বিতীয় গোল।
৩৮তম মিনিটে ফাঁকায় বল পেয়ে জোরালো শট নেন সুয়ারেস; তবে নাগালে থাকা বল ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরকথিবো কোর্তোয়া।
বিরতির আগে রামোস ছুটে গিয়ে লাফিয়ে বল দখলে নেওয়ার সময় তার হাত মেসির মুখে লাগলে বাড়তি উত্তেজনা ছড়ায়। দুজনে কিছুটা বাকযুদ্ধেও জড়িয়ে পড়েন, রেফারি গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
৫৯তম মিনিটে জেরার্দ পিকে ডি-বক্সে বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে পেয়ে যান ভিনিসিউস জুনিয়র। তবে তার শট ডিফেন্ডার কেমোঁ লংলের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। দুই মিনিট পর মেসিকে আবারও ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখে রিয়াল অধিনায়ক রামোস।
৭০তম মিনিটে উসমান দেম্বেলের দূরের পোস্টে নেওয়া শট অল্পের জন্য ল্যভ্রষ্ট হয়। প্রতিপরে জমাট রণ ভাঙতে না পেরে দূরপাল্লার শটে চেষ্টা চালান ভিনিসিউস ও কাসেমিরো। তাতে সাফল্য অবশ্য মেলেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঝে মধ্যে মেসির চোখে-মুখে কিছুটা অস্বস্তি ফুটে ওঠে। পারফরম্যান্সেও তার প্রভাব পড়ে। তবে যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আর্তুরো ভিদালের পাস পেয়ে অধিনায়কের নেওয়া শট পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।
২৬ ম্যাচে ১৮ জয় ও ছয় ড্রয়ে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান মজবুত করেছে বার্সেলোনা। ১০ পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে এক ম্যাচ কম খেলা আতলেতিকো মাদ্রিদ।
আর শিরোপাধারীদের চেয়ে ১২ পয়েন্ট পিছিয়ে পড়ে শিরোপা লড়াইয়ে থেকে অনেকটাই ছিটকে পড়ল রিয়াল মাদ্রিদ। তৃতীয় স্থানে থাকা দলটির পয়েন্ট ৪৮।
ভিয়ারিয়ালকে ২-১ গোলে হারানো আলাভেস ৪০ পয়েন্ট নিয়ে আছে চতুর্থ স্থানে। ১ পয়েন্ট কম নিয়ে পাঁচ নম্বরে আছে আছে এক ম্যাচ কম খেলা গেতাফে।
আর পয়েন্ট তালিকার তলানির দল হুয়েস্কার মাঠে ২-১ গোলে হারা সেভিয়া ২৬ ম্যাচে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে আছে ষষ্ঠ স্থানে।