কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় ২০১১ সালে চম্পাপুর নামে একটি নতুন ইউনিয়নের গঠিত হয়। ১১ বছর পার হলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি ইউনিয়নটিতে। গোটা ইউনিয়নে ৬০কিলোমিটার সড়কের মাত্র ৬ কিলোমিটার পাঁকা সড়ক রয়েছে।পাঁকা সড়কের মধ্যে ৬ থেকে ৭ স্থানে রয়েছে বড় বড় গর্ত। এ সড়কে যেকোন সময়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা করছে স্থানীয়রা। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত চম্পাপুর ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট পাঁকা করা এখন সময়ের দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বৃহত্তর ধানখালী ইউনিয়ন ভেঙ্গে ২০১১ সালে চম্পাপুর নামে নতুন একটি ইউনিয়নের করা হয়। ওই ইউনিয়নে ১২ টি গ্রামে মোট ৩০ হাজার মানুষের বসবাস করছেন।এখানে ১২ টি প্রাইমারী, ২ টি বেসরকারী, ৩ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১ টি দাখিল মাদ্রাসাসহ নিজস্ব এককমালিকানাধীন একাধিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা রয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীরা নিয়মিত অধ্যায়ন করে আসছে। বিশাল এ জনবসতিপূর্ণ ইউনিয়নের ৬০ কি.মি সড়কের ৫৪ কিলোমিটার সড়ক কাঁচা রয়েছে। ধানখালী থেকে চম্পাপুর ইউনিয়নে যাতায়তের জন্য একটি পাঁকা সড়ক রয়েছে। কলেজ বাজার থেকে অস্থায়ী ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত মাত্র ৬ কিলোমিটার পাঁকা সড়ক। চম্পাপুর ইউনিয়নে মোট ৬০ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে যার মধ্যে মাত্র ৬ কিলোমিটার পাঁকা। ৬ কিলোমিটার পাঁকা সড়কের ১ কিলোমিটারের মধ্যে ৬ থেকে ৭ স্থানে রয়েছে বড় বড় গর্ত। ফলে শুষ্ক মৌসুমে চলাচল করতে পারলেও বর্ষাকালে ছাত্র-ছাত্রীসহ স্থানীয়দের ভোগান্তির শেষ নেই। জিনিস-পত্র আনতে ভোগান্তী পোহাতে হয় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুরু হাওলাদার,আলতাফ গাজী বলেন,১১ বছর হয়ে গেলো ও চম্পাপুর ইউনিয়নটি অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে। যেখানে সারাদেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে এই সময় ইউনিয়নটিতে মাত্র ৬ কিলোমিটার পাঁকা রাস্তা রয়েছে যা কল্পনাও করা যায় না। আশা করছি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী,দেশের উন্নয়নের কান্ডারী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ইউনিয়নের প্রতি তার উন্নয়নের ছোয়া ছড়িয়ে দিবেন।
স্থানীয় দোকানদার নুরুল ইসলাম বলেন, রাস্তার যে অবস্থা তাতে উপজেলা সদর হতে মালামাল আনতে হিমশিম খেতে হয়। যে রাস্তাটুকু পাঁকা রয়েছে তা ভেঙ্গে নাজেহাল অবস্থা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। রাস্তা মেরামত ও কাঁচা রাস্তা পাঁকা করার জন্য তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বাচ্চু মোল্লা বলেন, কলাপাড়া উপজেলার মধ্যে ইউনিয়নটি দীর্ঘ বছর ধরে অত্যান্ত অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে। ইউনিয়নের ৬০ কি.মি সড়কের মাত্র ৬ কিলোমিটার সড়ক পাঁকা করা হয়েছে। বেড়িবাঁধ ভাঙ্গা থাকায় অতিরিক্ত জোয়ারের পানি ঢুকে সে সড়কও এখন নাজেহাল অবস্থায় রয়েছে। অতিসত্তর ভেড়িবাঁধ মেরামতসহ ভাঙ্গা সড়ক পাঁকাকরন ও ইউনিয়নের নির্দিষ্ট কিছু কাঁচা রাস্তা পাকা করা এখন সময়ের দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা আভাসের স্পন্সরশীপ অফিসার মো.আরিফুল ইসলাম বলেন, চম্পাপুর ইউনিয়নের প্রায় নব্বই ভাগই কাঁচা রাস্তা,যতটুকু পাকা রাস্তা আছে তা উচ্চ জেয়িেিরর কারনে ভেঙ্গে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্তমানে চলাচলে অসহানীয় দূর্ভোগ পোহায় এ জনপদের মানুষ।
চম্পাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদার বলেন, উপজেলা সদর হতে অনেক দুরত্ব ও দূর্গম এলাকায় হওয়ায় একমাত্র চম্পাপুর ইউনিয়নটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত রয়েছে। এ উপজেলায় বিভিন্ন মেঘা প্রযেক্টের কাজ চলমান থাকলেও কোন ধরনের উন্নয়নের ছোঁয়া এ ইউনিয়নকে স্পর্শ করেনি। উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে এ বিষয়ে আমি আলোচনা করে আসছি। যথাযথ কর্তৃপক্ষ অতিসত্তর এ ইউনিয়নটির প্রতি সু-দৃষ্টি দিবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এবিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোহর আলী বলেন, অর্থনৈতিক স্বল্পতা থাকায় ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনেক কাজ করা সম্ভব হয় না। ওই ইউনিয়নের পাঁকা সড়কটি সংষ্কারের প্রক্রিয়া চলছে। আরো কিছু সড়ক পাঁকা করনের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।
এসকেআর/এমআর