ছাতক(সুনামগঞ্জ) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। এ অফিসে অনিয়ম, ঘুষ, দূর্নীতি, হয়রানি, জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার এ.ডি.এম রুহুল আমীনের মাধ্যমে অফিসে বসে প্রতারনা, জালিয়াতি, অনিয়ম, দূর্নীতি, জায়গা জমি ভোগ দখলের পক্ষে রিপোর্ট দেয়ার কথা বলে একজন জনৈক মহিলার সঙ্গে ভূমি অফিসে বসে ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে এবং অফিস সহকারী সত্যবাবুসহ প্রধান কর্মকতা কর্মচারিদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দূর্নীতি,ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘুষ লেনদেনের ভিডিওটি ধামাচাপা দিতে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন একটি সিন্ডিকেট চত্রু। ভূমি অফিস বাইরে লেখা “দূর্নীতি মুক্ত অফিস” আর ভিতরে চলছে ঘুষ বাণিজ্য। উপজেলার ১৩টি ইউপি ও একটি পৌরসভা মিলে প্রায় তিনশতাধিক মৌজার রেকর্ডপত্র সামনে রেখেই পক্ষে বিপক্ষে সরেজমিন রিপোর্ট দেয়ার কথা বলে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার প্রকাশ্যে ঘুষ হাতিয়ে নেয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এখানে ওপেন ঘুষ কেলেংকারীর স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে। এঘটনায় উপজেলা জুড়েই ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে।
জানাযায়, গত ২৭ জুলাই সুনামগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারী সার্ভেয়ার এ.ডি.এম রুহুল আমীন উপজেলার ব্রাহ্মনজুলিয়া মৌজায় সরেজমিনে ঘটনাস্থল যান। সেখানে গিয়ে বাদীনী মহিলার বাড়ি ঘর, জায়গা জমি দীর্ঘদিন ধরে তার নিজ ভোগ দখলেই রয়েছে জেনেও তিনি টাকা না দিলে প্রতিবেদন তার বিপক্ষে দেবেন বলে ভয় দেখান। পরে গত ১ ও ৬ সেপ্টেম্বর ছাতকস্থল এসিল্যান্ড অফিসে সরাসরি ঘুষের টাকা লেনদেন করেন রুহুল আমীন। এসময় অফিস কক্ষে ঘুষের টাকার লেনদেনের ভিডিও তোলা নিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনাটি কাউকে না জানিয়ে গোপনে ধামাচাপা দেন অফিস সহকারি সত্যবাবু। প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। এ অফিসে ঘুষের বিনিময় জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল তৈরি করে একে অপরে জায়গা জমির সঠিক কাগজপত্র ছাড়াই হচ্ছে অবাধে নামজারি হচ্ছে।
সেবা নিতে আসা মানুষরা অভিযোগ করে বলেন, দূর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিনত হচ্ছে ছাতকে প্রতিটি ভূমি অফিস আগে টাকা পরে কাজ এভাবে চলছে ভূমি অফিসের কাজ কারবার। একটা নামজারিতে ১০-১৫ হাজার টাকা করেও নিচ্ছেন। এই কর্মকর্তাদের কাছে মানুষ জিম্মি হয়ে পড়ছে। ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার, তহসিলদার, অফিস সহকারী, পিয়ন সবাই ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। নামজারি, মিস কেস, মিস আপিল, সার্ভে রিপোর্ট, চান্দিনা ভিটা, এমপি কেস, খাস জমি বন্দবস্তি, ভিপি খাজনা দাখিলা থেকে শুরু করে সবকিছুতেই ঘুষের কারবার করেন তারা। তাদের ঘুষ নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়ে হযরানি করা হয়।
ঘুষের ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে সার্ভেয়ার এ.ডি. এম রুহুল আমিন বলেন, কে বা কারা ঘুষ দেওয়ার সময় ভিডিও করছে তার জানা নেই। এ ধরনের কোনো ভিডিও তার নেই। পরে ভিডিওটি দেখালে তিনি নিশ্চিত করেন ভিডিওর ব্যক্তিটি তিনি নিজেই। পরে ভিডিওর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
এব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসলাম উদ্দিন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার অফিসের সার্ভেয়ারের ঘুষ লেনদেনের ভিডিওটি তিনি দেখেছেন, যা তার অফিসের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এএমএল/এমআর