পটুয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
খাল মানুষের ধমনীর শিরার মতো, মানুষের ধমনীর শিরা বন্ধ হয়ে গেলে যেমন মানুষ বাঁচতে পারেনা। আর এই শহরের ধমনীর শিরা হচ্ছে বিভিন্ন খাল। খাল ছাড়া শহর বাঁচতে পারবেনা। খালগুলো আজকে কালভার্ট ও ড্রেনে পরিনত হয়েছে। এসব দেখে অনেকটাই হতাশ। অনেক খাল কিন্তু বিলিন হয়ে গেছে, দখল হয়ে গেছে। পটুয়াখালীতে ৫৩টি খাল ছিলো বলে জানা যায় এর অনেকগুলোই এখন খুঁজে পাওয়া যাবেনা। তবে প্রধান খালগুলো পুনরুজ্জীবিত করা হবে।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা নদী রক্ষা কমিটির আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন এর চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সংস্থা অপরিকল্পিতভাবে নদীর চরে বালু স্টক করে রেখেছে। এর কোন নিয়ম নেই। এসব বিষয়ে আমাদের চিন্তা-ভাবনা করার আছে। এবিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চেয়ারম্যান বলেন, হাইকোর্টের রায়ে নদীকে জীবন্ত স্বত্ত্বা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এখানে নদী বলতে বুঝানো হয়েছে নদী, খাল, বিল, জলাশয়, হাওয়ার ও বাওয়ারকে। এই নদী হলো লিগাল পার্সন। নদীর প্রবাহিত হওয়ার অধিকার আছে, নদীর দখল মুক্ত থাকার অধিকার আছে। এছাড়াও নদীর আর অধিকার আছে। নদী আদালতে গিয়ে স্ট্যাম্প দিয়ে মামলা করতে পরেনা। এজন্যই মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন এই জলাশয় ও নদীকূলের অবিভাবক হচ্ছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশবিদ এনামুল হক, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন এর উপ-পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) ড. খ. ম. কবিরুল ইসলাম, পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম (পিপিএম), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ হুমায়ুন কবির, পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন (পুর), জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যান’র একান্ত সচিব মু. বিল্লাল হোসেন খান, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন এর সহকারী পরিচালক (জিও টেকনিক্যাল) মো. তৌহিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক (গবেষণা ও পরিকল্পনা) আরশাফুল হক, সহকারী প্রধান (পরিবেশ ও প্রতিবেদক) সাকিব মাহমুদ, পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী শামসুর রহমান ইকবাল, সাধারন সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম প্রিন্স, জেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগন ও পটুয়াখালীর বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন এর চেয়ারম্যান, ডিজিটাল ড্রোনের মাধ্যমে সিএস ম্যাপ অনুযায়ী নদী ও খাল চিহ্নিত করে দখলকৃত নবাবপাড়া খাল, পুরাতন হাসপাতাল সংলগ্ন খাল, সুতাখালী খাল, মেডিকেল কলেজের পশ্চিম পাশের খাল ও বিসিক শিল্প নগরী সংলগ্ন খাল পুনরুদ্ধার করে প্রবাহিত হওয়ার অধিকার ফিরিয়ে দিতে জেলা প্রশাসক ও পৌর মেয়রসহ সংশ্লিস্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া পটুয়াখালীর অন্যান্য দখলকৃত নদী ও খালের উপরে থাকা বেড়িবাঁধ কেটে পুনরুদ্ধার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সভায়।
জেআর/এমআর