কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
কুয়াকাটায় বাংলাদেশ আদিবাসী ফেরামের উদ্যোগে রাখাইন সম্প্রদায়ের ভূমি,ভাষা, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অধিকার বিষয়ক বর্তমান প্রেক্ষিতে আমাদের করণীয় শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১ টায় রাখাইন পল্লী কালাচান পাড়ায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম বরিশাল অঞ্চলের সভাপতি মংচোথিন তালুকদারের সভাপতিত্বে পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার রাখাইন শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আলোচনায় সভায় অংশ নেয়। আলোচনায় রাখাইনদের ভ’মি দখল, শিক্ষা, সমাজ ব্যবস্থা নিজেদের বর্তমান নানামুখী সংকটের কথা তুলে ধরা হয়।
পটুয়াখালী জেলা রাখাইন সমাজকল্যান সমিতির সভাপতি টেনসুয়ে হাওলাদার প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, এ অঞ্চলের আদিবাসী রাখাইন সম্প্রদায় চলতি বছর বিশ^ আদিবাসী দিবসটি কলাপাড়ার প্রশাসন করতে দেয়নি। ১৯৫০ সালের প্রজাতন্ত্র আইন বাস্তবায়ন না হলে রাখাইনদের ভ’মি অধিকার নিশ্চিত হবে না। রাখাাইন সমাজকল্যান সমিতির সাধারন সম্পাদক মংতেন বক্তব্যে বলেন, রাষ্ট্রীয় ও সমাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে এখনও তাদের মগ’, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, উপজাতি বলে সম্মোধন করা হয়। বাস্তবে তারা কুয়াকাটার আদিবাসী রাখাইন সম্প্রদায়। রাষ্ট্রীয়ভাবে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দাবী তোলেন। আদিবাসীদের জন্য যেখানে বিশে^র সব দরজা খোলা সেখানে আমদের দেশে সব দরজাগুলো বন্ধ কেন এমন প্রশ্ন রেখে কলাপাড়া উপজেলা সিসিইউ ফেডারেশন সভাপতি মংম্যাচিন মাষ্টার বলেন, বিশ^ জুড়ে ভ’মির সঙ্গে আদিবাসীদের সম্পর্ক শুধু অর্থনৈতি বা সাংস্কৃতিক নয়, ভ’মির সঙ্গে আদিবাসীদের রয়েছে আধ্যাত্মিক সম্পর্ক। সেই ভ’মিতে থাকা রাখাইনদের জমি নানা অজুহাতে দখল হচ্ছে। বেদখলে যাচ্ছে দেবালয়সহ শ্মশানের জমিটুকু।
দিয়ারআমখোলা পাড়া কৃষিপন্য সংরক্ষণ সমিতির সভাপতি মংথেনথান রাখাইন বলেন, এ অঞ্চলের রাখাইনদের জীবন জীবিকায় কৃষি, সমুদ্র ও বনজঙ্গল কেন্দ্রীক। জমিজমা,বনজঙ্গল ও নদী না থাকায় তাদের খাদ্যাভাসে পরিবর্তন এসেছে। এ সম্প্রাদায়ের জন্য হুমকি স্বরুপ।
বরগুনা জেলার রাখাইন অধিকার অন্দোলন কর্মী মংচিথান রাখাইন বলেন, নানামূখী অস্থিত্ব সংকটে বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার সমতলের রাখাইনরা। সামাজিক,অর্থনৈতিক,শিক্ষা,জনবল ও সংস্কৃতিতে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে এ সম্প্রদায়। আদিবাসী রাখাইনদের অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগ না গ্রহন করলে এ সম্প্রদায় এক সময় হারিয়ে যাবে।
কলাপাড়া উপজেলা রাখাইন সাংস্কৃতিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক চোতেন রাখাইন তার বক্তব্যে বলেন, রাখাইনদের ভাষা সংস্কৃতি আজ বিল্পুতির পথে। এ অঞ্চলের শিশুরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজ ধর্মের বই পাঠের সুযোগ পাচ্ছে না। এসময় মুল প্রবন্ধ উপাস্থাপন করে বাংলাদেশ আদিবাসী ফেরামের বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাখাইন সমাজ উন্নয়ন কর্মী মংম্যা।
কেএআর/এমআর