চরফ্যাশন(ভোলা)সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নিখোঁজ চরফ্যাশনের দুই ট্রলারের ১৭ জেলের সন্ধান ৭ দিনেও মেলেনি। পরিবারের মধ্যে চলছে নদীর পাড়ে পাড়ে সন্ধান ও আহাজারী। জেলেরা কোন সংকেত না পাওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন উদ্ধারকৃত জেলেরা।
পরিবার ও থানা সূত্রে জানাযায়, উপজেলার দক্ষিণআইচা থানারধীন চরমানিকায় ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ট্রলারের নাম “এফবি লামিয়া”। ওই ্ট্রলারে ছিল ১৩ জেলেসহ নিখোঁজ রয়েছে। অপর ট্রলারটি একই ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের মন্নান মাঝির মালিকানাধীন। সে টলারে হল চারজন জেলে। বুধবার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল মতিন খান নিশ্চিত করেছেন। নিখোঁজ বারেক মাঝির ভাই মো. বাবুল বলেন, ‘গত ১৭ আগস্ট সকালে আমার ভাই বারেক মাঝি, আলাউদ্দিন মাঝি, আল-আমিন, দেলওয়ার, আলাউদ্দিন মীর, শাহিন হাওলাদার, আবুল মৃধা, মনির বেপারী, সারোয়ার, ইউসুফ, সফিউল্যাহ, ইব্রাহিম ও আরও একজনকে নিয়ে মাছ শিকারে সাগরে যায় এফবি লামিয়া। সাগরে বৈরি আবহাওয়ার পর থেকেই তাদের কোনও খোঁজ পাইনি। মোবাইল ফোনও রয়েছে বন্ধ। জীবিত কি মৃত তাও জানা নেই। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ যাতে নিখোঁজদের সন্ধান পেতে সহযোগিতা করে।’
জানা গেছে, বৈরি আবহাওয়ায় চরফ্যাশনের মোট ১০টি ট্রলার নিখোঁজ ছিল। এর মধ্যে বুধবার পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে আটটি ট্রলার। উদ্ধার হওয়া ট্রলারগুলোতে প্রায় দুই শতাধিক জেলে ছিল। বর্তমানে তারা নিজেদের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
সাগর থেকে ফিরে আসা মন্নান মাঝি বলেন, ‘আমি ১৭ জন জেলে নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যাই। হঠাৎ নিম্নচাপ শুরু হলে আমার ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। পরে সাগরে ভাসমান অবস্থায় পাশ দিয়ে যাওয়া রিয়াজ মাঝি ও ফিরোজ মাঝির ট্রলার আমার ১৭ জন জেলেকে উদ্ধার করে। কিন্তু মাছ ধরার ট্রলারটি সাগর থেকে আনা সম্ভব হয়নি। আমার ট্রলারটি যাতে ফিরে পাই, সে বিষয়ে সরকারের সার্বিক সহযোগিতা চাই।’
এই নিখোঁজ আত্মিয় স্বজনগণ জেলেদেও সন্ধানে নদীর পাড়েসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ খরব নিচ্ছেন। উপার্জনের একমাত্র অভিভাবকদেরকে না পেয়ে পরিবার পরিজনের মধ্যে কান্না ও আহাজারী করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চরফ্যাশন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল মতিন খান বলেন, ‘নিম্নচাপের পর থেকেই নিখোঁজ হওয়া ট্রলার ও জেলেদের উদ্ধার করতে কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের কয়েকটি টিম গভীর সমুদ্রে অভিযান চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত বারেক মাঝির ১৩ জন জেলেসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আরও ৪ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় বারেক মাঝির পরিবার দক্ষিণআইচা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
এএইচ/এমআর