আমতলীতে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম!

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম!
বুধবার ● ১৭ আগস্ট ২০২২


আমতলীতে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পুর্ব শত্রুতার জের ধরে আমতলী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সভাপতি মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁনকে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। মোয়াজ্জেম খাঁনের অভিযোগ উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান ও তার ভাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মজিবুর  রহমান তাদের লালিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করেছে। আহতকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেছে। ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে দিকে আমতলী পৌর শহরের  আল হেলাল মোড়ে।
জানাগেছে, ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁন প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। ওই নির্বাচনের পর থেকেই স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতির সাথে তার বিরোধ চলে আসছে। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তার ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের রেসানলে পড়ে বেশ কয়েকবার হামলার স্বীকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন হামলার স্বীকার মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁন আল হেলাল মোড়ে যায়। ওই স্থানে পৌছা মাত্রই উপজেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সবুজ ম্যালাকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইসফাক আহম্মেদ তোহা, রাহাত মৃধা, ছাত্রলীগ সদস্য শাহাবুদ্দিন সিহাব ও সন্ত্রাসী রুহুল আমিন  স্বে”্ছাসেবকলীগ সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতারি কোপাতে থাকে এমন দাবী প্রত্যক্ষদর্শীদের। তাকে কুপিয়ে সড়কে ফেলে রেখে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার হাত, মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়। সন্ত্রাসীদের এমন কর্মকান্ডে পৌর শহরের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মোঃ সুমন বিশ্বাস তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেছেন। বর্তমানে তিনি বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ন্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতিকে কুপিয়ে গুরুতর জখমের খবর সর্বত্র ছড়িয়ে পরলে তাৎক্ষনিক ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও শ্রমিকলীগ নেতাকর্মীরা সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার দাবীতে আমতলী চৌরাস্তায় টায়ার জ¦ালিয়ে বিক্ষোভ করে সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় আমতলী চৌরাস্তায় শতাধিক পরিবহন গাড়ী আটকে পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ওসি একেএম মিজানুর রহমানের আশ্বাসে আধা ঘন্টা পরে অবরোধকারীরা সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, সন্ত্রাসী সবুজ ম্যালাকার, মোঃ ইসফাক আহম্মেদ তোহা, রাহাত মৃধা, শাহাবুদ্দিন সিহাব, ও রুহুল আমিনসহ ১২-১৫  জন সন্ত্রাসী মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁনকে কুপিয়ে সড়কে ফেলে রেখে চলে যায়। তাদের এমন কর্মকান্ডে শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়।
মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁনের ছোট ভাই প্রত্যক্ষদর্শী সেলিম খাঁন বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান ও তার ভাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মজিবুর  রহমান তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে গত তিন বছরে বেশ কয়েকবার আমার ভাইয়ের উপরে হামলা করেছে। আমার ভাইকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিয়েই হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে কুপিয়েছে। তিনি আরো বলেন, পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান ও তার ভাই মজিবুর রহমান এক সময়ে বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। রাতারাতি বিএনপি রাজনীতি ছেড়ে আওয়ামীলীগের বড় নেতা হয়ে অপরাধের রাজত্ব কায়েম করে আসছে। দুই ভাইয়ের এমন অপরাধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আমার ভাই প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করতো। আমার ভাইয়ের কন্ঠ রোধ করতেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
আমতলী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি গুরুতর আহত মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁন বলেন, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানের ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন তপুর নেতৃত্বে সবুজ ম্যালাকার, মোঃ ইসফাক আহম্মেদ তোহা, রাহাত মৃধা, শাহাবুদ্দিন সিহাব, সুমন প্যাদা, রাকিব প্যাদা ও রুহুল আমিনসহ -১২-১৫ জন সন্ত্রাসী আমাকে কুপিয়েছে। তিনি আরো বলেন, পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানে নির্দেশে আমাকে হত্যা করতেই তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে কুপিয়ে আহত করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুমন খন্দকার বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, তার হাত ও মাথায় গুরুতর জখম রয়েছে।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন,আমি ঢাকায় আছি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।
আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, এখনো অভিযোগ পাইনি। এ ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার চেষ্টা অব্যহত আছে। তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারিনি।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২২:০০:২০ ● ২৫৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ