গলাচিপায় যৌতুক দাবিতে গৃহবধুকে নির্যাতন!
প্রথম পাতা »
পটুয়াখালী »
গলাচিপায় যৌতুক দাবিতে গৃহবধুকে নির্যাতন!
গলাচিপা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর গলাচিপায় যৌতুকের টাকা না দেয়ায় স্ত্রীকে মারধর করার খবর পাওয়া গেছে। প্রতিকার চেয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন স্ত্রী।
জানা গেছে, ২০২১ সালে রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের বাইলাবুনিয়া গ্রামের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মোস্তফা শিপাই এর ছেলে মো. নাজমুল শিপাই এর সঙ্গে পার্শবর্তী গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব গোলখালী গ্রামের মো. মোতালেব মৃধার মেয়ে মোসা. শিল্পি বেগম (৩৫) এর সাথে ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর হতে শিল্পি বেগমের বাবার বাড়ি হতে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে স্বামী ও তার পরিবার। শিল্পি বেগম যৌতুকের টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে স্বামী নাজমুল শিপাই ও শাশুড়ি মোসা. নাছিমা বেগম প্রায়ই গৃহবধু শিল্পি বেগমের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। গত মঙ্গলবার সকালে শিল্পির বাবা ও মায়ের কাছ হতে টাকা আনতে পূনরায় চাপ সৃষ্টি করে। শিল্পি বেগম টাকা আনতে অস্বীকার করিলে স্বামী নাজমুল শিপাই তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথারি মারপিট করে শরীরে বিভিন্ন স্থানে জখম করে। শিল্পি বেগমের ডাক চিৎকারে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডা. মেজবাহউদ্দিন জানান, আমার চিকিৎসাধীনে শিল্পি বেগম দ্বিতীয় তলায় ১৫ নম্বর বেডে ভর্তি আছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে কালো কালো দাগ আছে। এ বিষয়ে শিল্পি বেগমের বাবা মোতালেব মৃধা বলেন, আমার মেয়েকে ৩ লক্ষ টাকা কাবিনে নাজমুল শিপাই বিবাহ করেন। আমি প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ করে আমার মেয়েকে জামাইর বাড়িতে তুলে দেই। বিবাহের পর থেকেই নাজমুল শিপাই যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে প্রায়ই মারধর করে। মঙ্গলবার আমার মেয়েকে বেধম মারধর করলে আমার মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করি। আমি গরিব মানুষ। নাজমুল শিপাইকে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক দিব কীভাবে। এই কথা আমার মেয়ে নাজমুল শিপাইকে বললে সে আমার মেয়েকে মারধর করে। আমি প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে শিল্পি বেগম বলেন, আমার স্বামী নাজমুল শিপাই এর সাথে গত ১ বছর পূর্বে আমার বিবাহ হয়। আমার স্বামী নাজমুল শিপাই ব্যবসা করার জন্য আমার মা বাবার কাছ থেকে আমি ১ লক্ষ টাকা এনে দিতে বলে। আমার বাবা গরিব মানুষ। এত টাকা কোথায় পাবে বললে আমার স্বামী তার মায়ের কুপরামর্শে আমাকে মারধর করে। এ বিষয়ে নাজমুল শিপাই এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে চরমোন্তাজ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবু মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে শিল্পি বেগম বাদী হয়ে দুইজনকে আসামী করে গলাচিপা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা সি,আর মামলা নম্বর ৬১৮/২২। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে রাঙ্গাবালী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এসডি/এমআর
বাংলাদেশ সময়: ২২:১১:০০ ●
২২৫ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)