পাতাবুনিয়া লঞ্চ টার্মিনালে মাত্রাতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » পাতাবুনিয়া লঞ্চ টার্মিনালে মাত্রাতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ!
মঙ্গলবার ● ১৯ জুলাই ২০২২


পাতাবুনিয়া লঞ্চ টার্মিনালে মাত্রাতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ!

দুমকি(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাতাবুনিয়া  লঞ্চঘাটে ঢাকা-দুমকি নৌরুটে চলাচলকারি দোতলা লঞ্চে ও ঘাট টিকেটের নামে মাত্রাতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধারণক্ষমতার ভিত্তিতে প্রতি ৫০যাত্রীর বিপরীতে ১৪টাকা হারে নোঙ্গর (বার্থিং) চার্জ নেয়ার বিধান থাকলেও ৯শ’জন যাত্রী ধারণ ক্ষমতার লঞ্চে ২হাজার টাকা আদায় করছে। যা নির্ধারিত ফি’র ৭-১০গুণ। টার্মিনালে প্রবেশ ফি (ঘাট টিকেট ) জনপ্রতি ১০টাকা এবং ২০কেজির বেশী ওজনের মালামালেও অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে।
লঞ্চের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, বিআইডব্লিউটিএ’র একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা–কর্মচারীদের আস্কারায় বেপরোয়া ইজারাদারদের কাছে জিম্মি তাঁরা। ইজারাদারের দাবিকৃত অর্থ দিতে গরিমশি করলে তাদের নিয়োজিত শ্রমিকদের হাতে নাজেহাল হতে হয়। একারণে তারা মাত্রাতিরিক্ত টোল দিতে বাধ্য হচ্ছেন।  নির্ভযোগ্য সূত্রে জানায়ায়, পাতাবুনিয়া লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ঢাকা– পটুয়াখালী নৌ-রুটে ছোট ও মাঝারি আকারে এসব ৯শ’জন যাত্রী ধারণ ক্ষমতার এমভি ইয়াদ ও এমভি প্রিন্স সোহাগ নামের দু’টি দ্বোতলা লঞ্চ রোটেশনে চলাচল করছে।। নিয়মানুযায়ী এদুটো লঞ্চের নোঙ্গর (বার্থিং) ফি ২৩৪ টাকা। আদায় করা হচ্ছে ৮-১০গুণ।
এমভি ইয়াদ লঞ্চের সুপারভাইজার আবদুল গণি জানান, নতুন ইজারাদার মোঃ কামাল হোসেন আমাদের কাছে দুই হাজার টাকা নোঙ্গর ফি দাবি করেছে। তাদের দাবিকৃত টাকা দেয়া না হলে নাজেহালের আশংকা আছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপর একজন কর্মকর্তা বলেন,  বিআইডব্লিউটিএ সবকিছু জেনে শুনেও কার্যতঃ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। ইজারাদাররা প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকায় ঝামেলা এড়াতে সব মেনে নিতে বাধ্য হন তাঁরা।
অপর দিকে লঞ্চঘাটের টার্মিনালে প্রবেশ করতে ঘাট টিকিটের নামে যাত্রীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১০টাকা আদায় করা হচ্ছে। যাত্রী টিকিটের পাশাপাশি মালামাল ওঠা-নামায়ও দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে। টার্মিনালে প্রবেশ ফি’র নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে প্রায় প্রতিদিনই ঘাট শ্রমিকদের হাতে নাজেহাল হচ্ছেন যাত্রীরা। সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে এমন অপকর্ম দিনের পর দিন চলে আসছে বলে অভিযোগ সাধারণ যাত্রীদের।
আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের জালিশা গ্রামের বাসিন্দা সেকান্দার আলী শরীফ (ঢাকার যাত্রী) জানান, ঘাট টিকিটের নামে তার কাছ থেকে ১০ টাকা আদায় করলেও কোন টিকেট দেয়া হয়নি। তিনি আরও জানান, মালামাল ওঠাতে ও নামাতে ২০টাকার স্থলে ২শ’ টাকা আদায় করছেন। ইজারাদারের নির্দেশে টিকিটের বাড়তি হার নির্ধারণ করা হয়েছে বলে ঘাট শ্রমিকরা দাবি করছেন ।
একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেন, ‘দেশের সব লঞ্চঘাটে যাত্রী ওঠাতে পাঁচ টাকা ঘাট টিকিট দিতে হয়। ব্যতিক্রম কেবল পাতাবুনিয়া লঞ্চ ঘাটে। আঙ্গারিয়া গ্রামের নিরব খান নামের একজন ঢাকার যাত্রী অভিযোগ করে জানায়, এখানে যাত্রীপ্রতি ১০ টাকা করে ঘাট ফি দিতে হয়েছে। প্রতিবাদ করতে গেলে ইজারাদারের লোকজন তেড়ে আসে। মালামাল ওঠাতেও আগে ২০ টাকার স্থলে এখন ২শ’ টাকা দিতে হচ্ছে।
ঘাট ইজারাদার মো. কামাল হোসেন অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বগা-চরগরবদি টার্মিনালের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই টোল আদায় করা হচ্ছে। দোতলা লঞ্চের অতিরিক্ত নোঙ্গর ফি প্রশ্নে তিনি বলেন, মাত্র দু’টি লঞ্চ চলাচল করছে, ঘাটের খরচ বেশী, যাত্রী সংখ্যাও অনেক কমেছে, তাই হয়তো ঘাটের দায়িত্বরত লোকজন কিছু বেশী দাবি করছে । কিন্ত দেয়ার বেলায় আরও অনেক কম নেয়া হয়েছে।

এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:১৩:৪২ ● ৩০৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ