নেছারাবাদ (পিরোজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
নেছারাবাদে কলেজ পড়–য়া মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় পুলিশের পরিচয়ে ঘরে ঢুকে মেয়ের মাকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার স্বরূপকাঠী সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের রাহুতকাঠী গ্রামে। কলেজ ছাত্রীটির মা আহত হয়ে বর্তমানে নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) ছাত্রীটির বাবা মো. আসলাম বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। শনিবার সকালে পুলিশ এ ঘটনায় সাইদুল (৩৫) নামের একজনকে গ্রেফতার করে পিরোজপুর কোর্টে প্রেরণ করেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কলেজছাত্রীর মা তাছলিমা বেগম জানায়, কলেজছাত্রীর বাবা ও একমাত্র ভাই ঢাকায় থেকে পাপশের ব্যবসা করেন। বাড়িতে তাছলিমা তার কলেজ পড়–য়া ও ষষ্ঠ শ্রেনী পড়–য়া দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। জানা যায়, কিছুদিন পূর্ব থেকে কে বা কারা ওই কলেজ ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে অশালীন ভাষায় কু-প্রস্তাব ও জীবন নাশের হুমকি দিয়ে চিঠি লিখে তাদের অগোচরে প্রতিনিয়ত বাসার সামনে রেখে যায়। এমনকি গভীর রাতে অজ্ঞাত ব্যাক্তিরা বাসায় চালায় ঢিল ছোড়ে। ওই পরিবার বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিদেরকে জানালে তারা কোন রকম সহযোগীতা না করে পরিবারটিকে ফাঁদ পেতে ওই ব্যাক্তিদের ধরার পরামর্শ দেয়। বিগত ২৯জুন এ বিষয়ে ওই মেয়েটির মা তাছলিমা বেগম নেছারাবাদ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। ঈদের সময় ছাত্রীর বাবা বাড়িতে এসে গভীর রাত পর্যন্ত নিয়মিত বাসায় পাহারা দিতে থাকেন। গত ১১ জুলাই রাতে প্রতিবেশি আবু নোমান কায়েসের ছেলে মাইদুল চিঠি রাখতে এলে মেয়েটির পরিবার তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। এসময় ওই এলাকার ইউপি সদস্য মো. হাবিবুর রহমান, সাবেক ইউপি সদস্য মো. দুলাল ও মো. শাহিন ধৃত ছেলেকে উপযুক্ত শাস্তি দেয়াসহ ছাত্রীটির পরিবারকে ভবিষ্যতে নিরাপত্তা দেয়ার আশ^াস দিলে পরিবারটি আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহন থেকে বিরত থাকে। কিন্তু ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি তারা। গত ১৩ জুলাই রাতে পুলিশের পরিচয়ে মুখোশ পরিহিত অবস্থায় ৩/৪ জন দুবৃত্ত ছাত্রীটির ঘরের দরজা খুলতে বলে। একপর্যায় দরজা খোলার সাথে সাথে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে ছাত্রীটির মা তাছলিমার বাম হাতের কাঁধের নিচে ধারালো অস্ত্রের আঘাত করে। পরে পরিবারের লোকজনের চিৎকারে প্রতিবেশী লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। আহতবস্থায় পরিবারের লোকজন তাছলিমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান।
এ বিষয়ে নেছারাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) মো. সোলায়মান জানান, মামলায় এজাহারভুক্ত আসামী সাইদুল নামের একজনকে শনিবার গ্রেফতার করে পিরোজপুর কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যহত আছে।
আরএ/এমআর