দায়িত্বরত অবস্থায় মৃত্যু সহায়তার ক্ষেত্রে পুলিশ অবিচারের শিকার: চট্টগ্রামের ডিআইজি

প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » দায়িত্বরত অবস্থায় মৃত্যু সহায়তার ক্ষেত্রে পুলিশ অবিচারের শিকার: চট্টগ্রামের ডিআইজি
শুক্রবার ● ১ মার্চ ২০১৯


---

চট্টগ্রাম সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
দায়িত্ব পালন করার সময় মৃত্যু হলে সরকারি কর্মচারীদের সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের প্রাতি ‘অবিচার’ হয় বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক। শুক্রবার বন্দরনগরীর হালিশহরে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইনস মাঠে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ অনুষ্ঠানে তিনি এই অভিযোগ করেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত অবস্থায় মারা যাওয়া চট্টগ্রামের ১৯ পুলিশ সদস্যের পরিবারকে এ অনুষ্ঠানে সম্মাননা দেওয়া হয়। গোলাম ফারুক বলেন, অন্য কোনো ডিপার্টমেন্টে কর্তব্যরত অবস্থায় কেনো কর্মচারী মারা গেলে তারা আট লাখ টাকা সহায়তা পায়। এ ক্ষেত্রে কোনো পুলিশ সদস্য মারা গেলে তারা পায় পাঁচ লাখ টাকা। এটা আমাদের প্রতি এক ধরনের অবিচার করা হচ্ছে। পুলিশ মহাপরিদর্শক বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এনেছেন জানিয়ে ডিআইজি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখছেন। আমরা বলি অন্য কোনো ডিপার্টমেন্টে আট লাখ টাকা পেলে আমরা পাব ১০ লাখ। ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক সহিংসতায় পুলিশ সদস্যদের হতাহতের বিষয়টি তুলে ধরে গোলাম ফারুক বলেন, এ ধরনের অবস্থায় কেউ মারা গেলে তাদের সহায়তার পরিমাণটা আরও বেশি দেওয়া দরকার।
চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার মাহাবুবর রহমান অনুষ্ঠানে বলেন, কর্মরত অবস্থায় মারা গেলে সিভিল যে সুবিধা পায়, পুলিশেরও একই সুবিধা- এটা হতে পারে না। তিনির বলেন, অন্য কোনো সংস্থায় মারা গেলে ফ্ল্যাটবাড়ি পায়, অনেক অনুদান পায়। বেসরকারি ব্যাংক তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। তাহলে কেন আমার সদস্যর মৃত্যুর কারণে সরকার এগিয়ে আসবে না? বেসরকারি ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসবে না? এ বিষয়ে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মাহবুব বলেন, ”আমরা জানব আমরা কাজ করতে গিয়ে যদি মৃত্যুবরণ করি তাহলে সরকার আমাদের পাশে আছে। যদি মৃত্যুবরণ করি ফ্যামিলি দুই মাসের মধ্যে একটা ফ্ল্যাট পাবে। তাহলে আমার সদস্যরা হাজার গুণ মনোবল নিয়ে কাজ করতে ঝাঁপিয়ে পড়বে। সন্ত্রাসী হামলায় আহত পুলিশ সদস্যদের জন্য বাড়তি সহায়তা দাবি করে তিনি বলেন, যারা শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘœ ঘটায়, মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে অর্জিত দেশকে যে সকল শক্তি পেছনে নিয়ে যেতে চায় তাদের আঘাতে মৃত্যু হলে কেন রাষ্ট্র আমাদের জন্য স্পেশাল কিছু দেবে না? দায়িত্ব পালনকালে মারা যাওয়া পুলিশ সদস্যদের ‘বীর’ অভিহিত করে পুলিশ কমিশনার বলেন, যারা কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, যারা জীবন দিয়েছে তারা বীর। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করতে পারিনি। কিন্তু এখন যারা দেশের জন্য লড়ছে, যারা জীবন দিচ্ছে, তারা অবশ্যই শহীদের মর্যাদা পাবে। রাষ্ট্র এবং সরকার আমাদের সেভাবেই দেখবে আশা করি। অন্যদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে কর্মরত অবস্থায় হৃদরোগে মারা যাওয়া কনস্টেবল অভি দাশের মা বিধু দাশ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক পুলিশ সুপার আল্লাহ বক্স, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। কর্তব্য পালনের সময় মৃত্যু হওয়া পুলিশ কর্মচারি-কর্মকর্তাদের স্মরণে ২০১৬ সাল থেকে প্রতি বছর ১ মার্চ ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ পালন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৪:০৬ ● ৫৬২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ