পিরোজপুর সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে আশ্রয়ন প্রকল্পের ত্রাণের ঘরে এসি লাগিয়ে থাকেন এক জেপি নেতা! বিষয়টি পুরো এলাকায় আলোচনার ঝড় উঠছে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও হতদরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে সরকার সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর জন্য গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছেন। কিন্তু দরিদ্র হিসেবে গৃহহীনের কোঠায় ঘর পাওয়া ওই জেপি নেতার ঘরে এসি এবং আকাশ ডিটিএইচ লাগানোর পর এলাকায় রীতিমত চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর মধ্যে আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে উনি যদি প্রকৃত দরিদ্রই হন তাহলে কিভাবে তার ঘরে এসি এবং আকাশ ডিটিএস ব্যবহার হয়। আর এ ঘটনা পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার বালিপাড়া গ্রামে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইন্দুরকানী উপজেলায় হাতে গোনা কিছু সরকারি অফিস, মসজিদ এবং বাসাবাড়িতে এসি ব্যবহার হয়। এ ছাড়া এলাকার অন্যান্য বাসা-বাড়িতে বা বহুতল ভবনে সচরাচর এসির ব্যবহার চোখে পড়ে না। অথচ সরকারের দেয়া আশ্রায়ণের ঘরে ব্যবহার হচ্ছে এসি! যিনি ওই ঘরের মালিক তিনি জাতীয় পার্টি জেপির সহযোগী সংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজ পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার ৩নং বালিপাড়া ইউনিয়ন শাখার আহবায়ক। একটি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা হওয়ার সুবাধে দলীয় সুপারিশে তিনি এ ঘরটি পেয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি ড্রেজার ব্যবসার সাথে জড়িত। মাসে ৫০ থেকে এক লাখ টাকার মত তার আয় রয়েছে। চলেন প্রায় দুই লাখ টাকা মূল্যের পালসার গাড়ীতে। চলাফেরা কিংবা বেশভূষা দেখে বোঝার উপায়ই নেই যে তিনি একজন দরিদ্র মানুষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য এ উপজেলায় ৫৪৪টি গৃহ নির্মান এর উদ্যোগ নেয় সরকার। এর মধ্যে কিছু ঘর নির্মানাধীন অবস্হায় থাকলেও বাকি ঘর গুলোর নির্মান কাজ সম্পন্ন হওয়ায় তালিকা ভুক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার গুলোর মাঝে ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিক ভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এ উপজেলায় জাতীয় পার্টি (জেপি)র দলীয় সুপারিশে বেশ কিছু ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। যার অধিকাংশই জেপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মিদের নামে বরাদ্ধ নিয়েছেন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে নিজ নামে আশ্রায়ণের ঘর পাওয়া মো: ইকবাল সেপাইর কাছে জানতে চাইলে তিনি সত্যতা অস্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, সরকারি ভাবে আমি এই ঘরটি পেয়েছি। আমি গরম সহ্য করতে পারিনা তাই ঘরে এসি লাগিয়েছি। এতে দোষের কি হল।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: সফিকুল ইসলাম বলেন, গৃহহীনদের তালিকায় বালিপাড়া গ্রামে ইকবাল সেপাইর নামে একটি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি নিজ উদ্যোগে ঘরে এসি লাগিয়েছেন বলে লোকমুখে শুনেছি।
ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন্নেসা খানম বলেন, যারা দরিদ্র ও অসহায় এমন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার গুলোকে সরকারী খরচে গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছেন বর্তমান সরকার। কোন অসচ্ছল ব্যক্তিরা এ ঘর পাওয়ার কথা নয়। তারপরও এ ধরনের অভিযোগের সূত্র ধরে বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য খোঁজ খবর নিয়ে দেখা হবে।
আরএইচএম/এমআর