গলাচিপা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার উলিয়ানা হাট স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে আবার মুখরিত হয়ে উঠেছে। শঙ্কা কেটেছে ব্যসায়ী ও ক্রেতাদের। আগের মতো করেই ঘাটে ভিড়েছে ট্রলার, নৌকা। বেচাকেনায় ব্যস্ত দোকানদাররা।
শুক্রবার (১৭ জুন) শেষ বিকেলে উলানিয়া হাট ঘুরে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উদ্যোগে সমন্বয় সভায় সকল সমস্যা সমাধান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রতনদীতালতলী ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা খান।উলানিয়া বাজারে আসা ট্রলার মালিক ইয়ামিন পাহলান বলেন, ঘাট ইজারাদার আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি এখন সবার সাথেই ভালো আচরণ করছেন। কারো উপর টোল নিয়ে কোনও ধরণের খারাপ আচরণ করবেন না বলে সকলের কাছে স্বীকার করেছেন। তাই আমরা উলানিয়া হাটে ট্রলার নিয়ে ব্যবসার জন্য এসেছি। তবে এখন পর্যন্ত লঞ্চ মালিকরা লঞ্চঘাটে লঞ্চ নোঙর না করে ট্রলার ঘাটেই রেখেছে। এই একটি সমস্যা ছাড়া আপাতত আর কোন সমস্যা নেই। ট্রলারঘাটের ভাতের হোটেল ব্যবসায়ী বিউটি রাণী বলেন, গত শুক্রবার (১০ জুন) বাজার মেলেনি। তাই আমাদের বেচাকেনাও কম হয়েছিল। আজ (শুক্রবার) অনেক ট্রলার আর বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ বাজারে এসেছে। আমাদের বেচাকেনাও অনেক ভালো। উলানিয়া বাজারের জাল সুতার ব্যবসায়ী বিকাশ দেবনাথ জানান, গলাচিপা উপজেলার ঐতিহ্যবাহি উলানিয়া বাজার।স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বসে আলোচনা করে আমাদের সমস্যা সমাধান করে দিয়েছেন। শুক্রবার বাজার আবার সরব হয়ে উঠেছে। বেচাকেনা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে। উলানিয়া বাজারের গুড় ব্যবসায়ী ও মতুয়া মিশনের জেলা কমিটির উপদেষ্টা কেশব সাধু বলেন, গত মঙ্গলবার ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা খান ও স্থানীয় বণিক সমিতির সদস্যরা আমাদের নিয়ে বসে ঘাট ইজারাদারের সাথে যে সমস্যা ছিল তা সমাধান করে দিয়েছেন। শুক্রবার বাজারে শতাধিক ট্রলার এসেছে। আগের মতোই বাজারে সবাই বেচাকেনায় ব্যস্ত রয়েছে। আশা করি বাজারটি রক্ষার জন্য সবাই এক সাথে কাজ করবে। বাজার আবার স্বাভাবিক এবং আগের মতো করে উলানিয়া হাট মুখরিত। এ বিষয়ে উলানিয়া বণিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বুলবুল বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করতে পেরেছি। আগামীতে আর যেন কোন সমস্যা না হয় সে দিকে আমরা খেয়াল রাখবো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উলানিয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ও পল্টুলবিহীন লঞ্চ, ট্রলার ও খেয়াঘাট ইজারাদার মো. জাহাঙ্গীর পারভেজ বলেন, আমরা নিয়ম মতোই ঘাটের ইজারা আদায় করছি। এরপরও যতটুকু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে তা সমাধান করা হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে আমরা একসাথে চলতে চাই। বাজার আবার আগের মতো করেই জমে উঠুক। এ ঘটনা সম্পর্কে রতনদীতালতলী ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা খান বলেন, আমি উলানিয়া বাজারের ব্যবসায়ী ও ট্রলার মালিকদের নিয়ে বসে আলোচনা করেছি। টোল আদায়কারীকে সরকারি নীতিমালা মেনে টোল আদায়ের জন্য বলা হয়েছে। একই পণ্য থেকে একাধিকবার কোন টোল আদায় করা যাবে না। আশাকরি সামনের দিনগুলোতে আর সমস্যা হবে না। উল্লেখ্য, পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার উলিয়ানা বাজারের পল্টুনবিহীন লঞ্চ, ট্রলার ও খেয়াঘাটের ইজারাদারের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত টোল ও খামখেয়ালীর অভিযোগ উঠেছে। আর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ট্রলার মালিক ব্যবসায়ী ও ইজারাদারের সাথে দ্বন্দ্বে গত শুক্রবার (১০ জুন) ঘাটে আসেনি কোনও বাণিজ্যিক ট্রলার, মেলেনি হাট। আর এতে শুধু হাটবারই কমপক্ষে আট কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই বাজারের ব্যবসায়ীরা।
এসডি/এমআর