আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
১০ দিনেও নিরসন হয়নি বরগুনা ও পটুয়াখালী মালিক সমিতির দ্বন্ধ। বরগুনা মালিক সমিতির অভিযোগ সিদ্ধান্ত ছাড়াই শনিবার পটুয়াখালী মালিক সমিতি জোরপুর্বক বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে গাড়ী চালাচ্ছেন কিন্তু তাদের গাড়ী চালাতে দিচ্ছেন না। এ দ্বন্দের জেরে বরগুনা মালিক সমিতির ২৩ খানা গাড়ী বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা ও তালতলী সড়কে চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সড়কে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জানাগেছে, ২০১৮ সালে বরিশাল, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা বাস মালিক সমিতি সমন্বয় সভা হয়। ওই সভায় সিধান্ত মোতাবেক গত চার বছর ধরে তিন জেলায় বাস চলাচল করছে। তিন জেলার ১৭ খানা বাস বরিশাল-তালতলী সড়কে চলাচল করে। এর মধ্যে বরগুনা মালিক সমিতির ৭, পটুয়াখালী মালিক সমিতির ৫ এবং বরিশাল মালিক সমিতির ৫ খানা গাড়ী রয়েছে। আমতলী-তালতলী সড়কে খানাখন্দ থাকার করনে গত দুই বছর ধরে তালতলী-বরিশাল রুটে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। গত ১৫ মে থেকে তালতলী সড়কে বাস চলাচল শুরু হয়। ওই সময়ে পটুয়াখালী মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ ওই সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং ওই সড়কের গাড়ীগুলো বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কে চলাচল করে। এতে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে রুটেশনে সমস্যা দেখা দেয় বলে দাবী করেন বরগুনা বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হাসান মৃধা। পটুয়াখালী মালিক সমিতির এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেন বরগুনা মালিক সমিতি। এ নিয়ে বরগুনা মালিক সমিতি ও পটুয়াখালী মালিক সমিতির মধ্যে দ্বন্ধ হয়। গত ১৮ মে পটুয়াখালী মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ বরগুনা মালিক সমিতির গাড়ী পটুয়াখালী বাস স্ট্যান্ডে আটকে দেয়। পটুয়াখালী মালিক সমিতির বাস বন্ধের সাতদিন পরে গত বুধবার বরগুনা মালিক সমিতির লোকজন পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে চলাচলরত পটুয়াখালী মালিক সমিতির বাস আমতলী বাস স্ট্যান্ডে আটকে দেয়। গত ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও দুই জেলার মালিক সমিতির দ্বন্ধ নিরসন হয়নি। এদিকে বরগুনা মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই পটুয়াখালী মালিক সমিতি আমতলীতে আলাদা কাউন্টার দিয়ে শনিবার সড়কে গাড়ী চলাচল শুরু করেছে। বরগুনা মালিক সমিতির লোকজন পটুয়াখালী মালিক সমিতির গাড়ী সড়কে চলাচলে বাধা দিলে আমতলী কাউন্টারে থাকা লোকজন তাদের প্রতিহত করছে। এতে আমতলীতে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কার করছেন বরগুনা মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ। অপর দিকে পটুয়াখালী মালিক সমিতির গাড়ী সড়কে চলাচল করলেও বরগুনা মালিক সমিতির ২৩ খানা গাড়ী সড়কে চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কে কম গাড়ী চলাচল করায় চরম দুর্ভোগে পরেছেন যাত্রীরা।
যাত্রী হক মৃধা, সোহরাব হোসেন, বাকি বিল্লাহ ও আব্দুল আজিজ বলেন, সড়কে গাড়ী অনেক কম। গন্তব্য স্থানে যেতে সমস্যা হচ্ছে।
বরগুনা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ গোলাম মোস্তফা কিসলু বলেন, কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শনিবার থেকে পটুয়াখালী মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ জোরপুর্বক বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কে গাড়ী চালাচ্ছেন। আমরা যেন বাঁধা দিকে না পারি সেই লক্ষে আমতলী বাসস্ট্যান্ডে জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধার নামে কাউন্টার দিয়ে তাদের লোকজন রেখে আমাদের লোকজনকে প্রতিহত করছেন। তিনি আরো বলেন, গত ১০ দিন ধরে আমাদের ২৩ খানা গাড়ী সড়কে চলাচল বন্ধ রয়েছে। রবিবার ১১ টায় পটুয়াখালীতে দুই জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে তাদের প্রতিনিধি মাধ্যমে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। ওই আলোচনায় সমস্যা সমাধান না হলে আমার নুতন করে কর্মসুচি দেব।
পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ রিয়াজ উদ্দিন মৃধা বলেন, দুই জেলার প্রশাসনের উদ্যোগে রবিবার আলোচনায় বসা হবে। যাত্রীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে বাস চলাচল শুরু করে দিয়েছি। কিন্তু বরগুনা মালিক সমিতির লোকজন ইচ্ছা করেই সড়কে বাস চালাচ্ছেন না।
বরগুনা জেলা প্রশাসন হাবিবুর রহমান বলেন, বরিবার বেলা ১১ টায় দুই জেলা প্রশাসকের দুই প্রতিনিধি আলোচনায় বসে সমস্যা সমাধান করবেন।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, দুই জেলা প্রশাসনের দুই প্রতিনিধির মাধ্যমে মালিক সমিতির লোকজনের সাথে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দ্বন্ধ নিরসনে সভা হবে।
এমইচকে/এমআর