আমতলী (রগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনা ও পটুয়াখালী মালিক সমিতির দ্বন্ধের জেরে পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম বিপাকে পরেছে সড়কে চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রী। মালিক সমিতির দ্বন্ধ নিরসন করে দ্রুত বাস চলাচলের দাবী জানিয়েছেন যাত্রীরা।
জানাগেছে, ২০১৮ সালে বরিশাল, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা বাস মালিক সমিতি সমন্বয় সভা হয়। ওই সভায় সিধান্ত মোতাবেক গত চার বছর ধরে তিন জেলায় বাস চলাচল করছে। তিন জেলার ১৭ খানা বাস বরিশাল-তালতলী সড়কে চলাচল করে। এর মধ্যে বরগুনা মালিক সমিতির ৭, পটুয়াখালী মালিক সমিতির ৫ এবং বরিশাল মালিক সমিতির ৫ খানা গাড়ী রয়েছে। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ও আমতলী-তালতলী সড়কে খানাখন্দ থাকার করনে গত দুই বছর ধরে তালতলী-বরিশাল রুটে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। গত ১৫ মে থেকে তালতলী সড়কে বাস চলাচল শুরু হয়। ওই সময়ে পটুয়াখালী মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ ওই সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং ওই সড়কের বাসগাড়ীগুলো পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কে চলাচল করে। এতে বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কে রুটেশনে সমস্যা দেখা দেয় বলে দাবী করেন বরগুনা বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হাসান মৃধা। পটুয়াখালী মালিক সমিতির এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেন বরগুনা মালিক সমিতি। এ নিয়ে বরগুনা মালিক সমিতি ও পটুয়াখালী মালিক সমিতির মধ্যে দ্বন্ধ হয়।
বিগত ১৮ মে পটুয়াখালী মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ বরগুনা মালিক সমিতির গাড়ী পটুয়াখালী বাস স্ট্যান্ডে আটকে দেয়। এ সমস্যা সমাধানে বরগুনা মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ পটুয়াখালী মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষের কাছে গাড়ী ছেড়ে দিয়ে বিষয়টি বসে মিমাংশার অনুরোধ করেন। কিন্তু পটুয়াখালী মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ বরগুনা মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষের কথার কোন কর্ণপাত করেনি। সাতদিন ধরে তাদের বাস আটকে রাখে। নিরুপায় হয়ে বরগুনা মালিক সমিতির লোকজন বুধবার পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে চলাচলরত পটুয়াখালী মালিক সমিতির বাস আমতলী বাস স্ট্যান্ডে আটকে দেয়। এ দ্বন্ধ নিরসনে দুই জেলার মালিক সমিতির লোকজন এবং আমতলী ও পটুয়াখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বসে বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি মিমাংশার কথা ছিল। সেইমতে বুধবার দুপুরে সড়কে গাড়ী চলাচল শুরু করে। কিন্তু অজ্ঞাত করনে ওই বৈঠক বন্ধ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পুনরায় পটুয়াখালী মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ বরগুনা মালিক সমিতির বাস আটকে দেয় বলে দাবী করেন বরগুনা মালিক সমিতির কার্যকরী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান মৃধা। পরে তারাও পটুয়াখালী মালিক সমিতির বাস কুয়াকাটা মহাসড়কে চলাচলকৃত গাড়ী আটকে দেয়। দুই জেলার মালিক সমিতির দ্বন্ধে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে কয়েক হাজার যাত্রী। দ্রুত সমস্যা সমাধান করে যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবের দাবী জানিয়েছেন যাত্রী জুয়েল রানা, সোহাগ, সামসুদ্দিন ও জাহাঙ্গির।
যাত্রী সাখাওয়াত হোসেন, আলমঙ্গীর ও শাহজাহান বলেন, সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। চরম ভোগান্তির মধ্যে পরতে হয়েছে। বাস আটকে এভাবে মালিক সমিতির দ্বন্ধ নিরসন করতে পারে না। দ্রুত বিষয়টি মিমাংশা করে সড়কে বাস চলাচলের দাবী জানান তারা।
আমতলী থানার ওসি একএম মিজানুর রহমান বলেন, যথাযথ কর্তপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি নিরসনের চেষ্টা চলছে।
বরগুনা মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ গোলাম মোস্তফা কিসলু বলেন, বিয়য়টি মিমাংশার জন্য পটুয়াখালী মালিক সমিতির সাথে বৃহস্পতিবার রাতে বসার কথা ছিল কিন্তু আলোচনার না বসে নির্ধারিত সময়ের আগে পটুয়াখালী মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ বরগুনা মালিক সমিতির গাড়ী আটকে দেয়। নিরুপায় হয়ে আমরাও পটুয়াখালী মালিক সমিতির কুয়াকাটা সড়কে চলাচলকৃত গাড়ী আটকে দিয়েছি।
পটুয়াখালী মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ রিয়াজ উদ্দিন মৃধা বলেন, বরগুনা মালিক সমিতি আমতলী-বরিশাল রুটে দুই খানা গাড়ী বেশি চালায়। পটুয়াখালী মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ বরগুনা মালিক সমিতি কতর্ৃৃপক্ষকে ওই দুই খানা গাড়ী সরিয়ে নিতে অনুরোধ করে কিন্তু বরগুনা মালিক সমিতি সেই অনুরোধ উপেক্ষা করে জোর পুর্বক গাড়ী চালাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে ওই দুই খানা গাড়ী আটকে দেই কিন্তু বরগুনা মালিক সমিতি আমাদের অনেক গাড়ী আটকে দিয়ে যাত্রীদের হয়রানী করছে। তিনি আরো বলেন, দুই মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষের বৃহস্পতিবার এ বিষয়টি সমাধানে বসার কথা ছিল কিন্তু তারা বিভিন্ন অযুহাতে বসেনি।
এমএইচকে/এমআর