সাগরকন্যা স্পোর্টস ডেস্ক ॥
বিরুদ্ধ কন্ডিশন, সবুজাভ উইকেটে আগে ব্যাটিংয়ের চ্যালেঞ্জ, প্রতিপরে দারুণ পেস আক্রমণ-চোখ রাঙানি ছিল অনেক কিছুর। সব সামলে তামিম ইকবালের সৌজন্যে বাংলাদেশের শুরুটা হলো দুর্দান্ত। কিন্তু বাজে শটের প্রতিযোগিতায় আশা জাগানিয়া শুরু শেষ হলো হতাশায়। হ্যামিল্টন টেস্টের প্রথম দিন শেষে সেই আপে দিনের নায়ক তামিমের কণ্ঠে।
ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদিকে পাত্তা না দিয়ে প্রথম ১০ ওভারেই ৫৩ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ঘণ্টায় রান ছিল ৮০। তামিম ছুটছিলেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে। এরপরও পথ হারিয়ে দল হাঁটে বিপর্যয়ের পানে। ১২৮ বলে ১২৬ রান করেছেন তামিম। অন্যরাও সবাই মিলেও করতে পারেনি তার সমান। এক পর্যায়ে রান ছিল ১ উইকেটে ১২১। সেখান থেকে দল গুটিয়ে গেছে ২৩৪ রানেই। ২৭ রানে পড়েছে শেষ ৫ উইকেট। শুরুটাকে কাজে লাগাতে না পারায় গোটা দলই হতাশ, দিন শেষে বললেন তামিম।
“সত্যি কথা বলতে, এই ধরণের কন্ডিশনে আমাদের এমন শুরু পাওয়া স্বপ্নের মতো ব্যাপার। সাধারণ প্রথম দিনে, সবুজ উইকেটে, শুরুতেই ২-৩ উইকেট পড়ে যায় আমাদের। অনেকবার হয়েছে এমন। আজ এত সুন্দর শুরুর পরও কাজে লাগাতে না পারা হতাশার।”
“এমন নয় যে আমি সেঞ্চুরি করেছি বলেই এমনটা বলছি। বাকি যারা আছে ড্রেসিং রুমে, সবাই হতাশ, কারণ এত ভালো শুরু হয়েছিল।”
বোল্ট-সাউদির বল অনায়াসে খেলে বাংলাদেশ উইকেট বিলিয়ে এসেছে নিল ওয়েগনারের বলে। সবসময় যেভাবে বল করেন, এদিনও সেভাবে একের পর এক শর্ট বলে করে গেছেন এই বাঁহাতি পেসার। ব্যাটসম্যানরাও ফাঁদে পা দিয়ে আউট হয়েছে শট খেলতে গিয়ে। ৪৭ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন ওয়েগনার, পাঁচটিই শর্ট বলে।
তামিম ওয়েগনারকে দারুণ খেলেছেন। তবে অন্যান্যের না পারায় প্রতিপরে সাফল্যের চেয়ে নিজেদের ভুলকে বড় করে দেখছেন তিনিও। ওয়েগনারের বিপে নিজের সাফল্যের পথটাও জানালেন। “যদি আমাদের আউটগুলো দেখেন, খুব ভালো বলে কিন্তু আমরা আউট হইনি। কম-বেশি ওদের যা পরিকল্পনা ছিল, আমরা সেই পরিকল্পনাকে সফল করে দিয়েছি। ভুল শট খেলে আউট হয়েছি আমরা।”
“সব ব্যাটসম্যানেরই নিজের পরিকল্পনা থাকা উচিত। আমার মনে হয়, আমরা ভালো করতে করতে হুট করে ভুল করে ফেলেছি। ওয়েগনার কিভাবে বল করে, আমরা সবাই জানি। আজকে নয়, গত দুই-চার-পাঁচ বছর ধরে একই কাজ করছে। ওকে কিভাবে সামলাব, এটা পুরোই নিজের ব্যাপার। অনেকেই পুল খেলতে পছন্দ করে। অনেকে ‘ডাক’ করে। আমার যেমন মনে হয়ে, ‘ডাক’ করাই ভালো, সেটাই করে গেছি।”
ওয়ানডে সিরিজে ৩ ম্যাচে মাত্র ১০ রান করলেও তামিম এ দিন স্বরূপে ফিরেছেন। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন কিউইদের। ৩৭ বলে করেছিলেন ফিফটি, সেঞ্চুরি ১০০ বলে। জানালেন, নিজের পরিকল্পনা স্পষ্ট ছিল বলেই সফল হয়েছেন। আবারও আপে করলেন দলের জন্য।
“একটি পরিষ্কার পরিকল্পনা ছিল আমার। পরিকল্পনা হলো, যদি জায়গা মেলে, যদি মারার বল পাই, তাহলে শট খেলার চেষ্টা করব বিশ্বাস নিয়ে। সৌভাগ্যবশত শুরুতেই কিছু বাউন্ডারি পেয়ে যাই। এরপর নিজের চাওয়ামতো ব্যাট করে গেছি।”
“উইকেট ছিল দারুণ, সবুজাভ হলেও বল খুব বেশি কিছু করেনি। আমাদের উচিত ছিল এর চেয়ে অনেক বেশি রান করা। দিনশেষে নিজেদেরই দায় নিতে হবে। সারাদিন ব্যাট করলে হয়তো সাড়ে তিনশ-চারশ রান করে ফেলতাম আমরা।”