নেছারাবাদে ব্রিজের মালামাল গায়েব!

প্রথম পাতা » পিরোজপুর » নেছারাবাদে ব্রিজের মালামাল গায়েব!
মঙ্গলবার ● ১৭ মে ২০২২


নেছারাবাদে ব্রিজের মালামাল গায়েব!

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

নেছারাবাদ উপজেলার সমুদয়কাঠী ইউনিয়নে জাইকার কাজের সময় বিভিন্ন লোহার ব্রিজের উদ্ধারকৃত মালামাল গোপনে গোডাউন থেকে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এম কে সবুর তালুকদার তার গোডাউন থেকে নিজস্ব লোকদিয়ে ওই মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউএনওকে অবহিত করলে ইউএনও বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সরেজমিনে ওই ইউনিয়নের সাগরকান্দা বাজার এলাকায় গিয়ে স্থাণীয় বাসিন্দা সেলিম ফরাজি, ফিরোজ হাওলাদার ও দুলাল ফকিরসহ একাধীক ব্যাক্তির কাছ থেকে জানা যায়, ওই এলাকার জনৈক মাহবুব তালুকদারের একটি ঘর ভাড়া নিয়ে নিজের গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এম কে সবুর তালুকদার। তার ওই ঘর থেকে গত কয়েকদিন রাতে ব্রিজের কিছু লোহার মালামাল ট্রলারে করে সরিয়ে নিতে দেখে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। রবিবার রাতে চেয়ারম্যান সবুরের লোক হিসেবে পরিচিত কবির তালুকদার ও হাফিজ তালুকদার ট্রলারে করে পূনরায় মালামাল সরিয়ে নেতে দেখে তারা স্থানীয় সাংবাদিকদের বিষয়টি জানালে ঘটনাস্থলে যায় স্থানীয় সাংবাদিকরা। সেখানে গিয়ে তারা ওই মাহবুব তালুকদারের ঘরে অবশিষ্ট মালামাল দেখতে পায়। এসময় মাহবুব জানান, তার ঘর সাবেক চেয়ারম্যান সবুরের কাছে ভাড়া দেয়াছিল। ঘরে থাকা সব মালামাল চেয়ারম্যান সবুরের তিনিই তার লোকজন দিয়ে তার মালামাল নিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে সমুদয়কাঠি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো.হুমায়ুন কবির বেপারী অভিযোগ করেন, ২০১১-১২ অর্থ বছরে জাইকার অর্থায়নে সমুদয়কাঠী ইউনিয়নের সেহাংগল বুদ্ধির বাজার থেকে সাগরকান্দা হয়ে জিনুহার পর্যন্ত সড়কের মধ্যে থাকা ২১টি ব্রিজ কালভার্ট নির্মানের কাজ করে এলজিইডি। ওইসময় ওই ব্রিজগুলোর মালামাল জব্দ তালিকা করে ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান এম কে সবুর তালুকদারকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। চেয়ারম্যান ওই মালামালের সামান্য কিছু অংশ ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউনে রেখে বাকী মালামাল তার নিজের হেফাজতে নিয়ে যায়। এর পর থেকে ওইসব মালামালের কোন হদিস পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক চেয়ারম্যান এম কে সবুর জানান, জাইকার কাজের সময় তিনি যে মালামাল পেয়েছেন তা দিয়ে এলাকায় পুল করা হয়েছে। ওই গোডাউনে থাকা মালামাল তার ক্রয় করা বলে তিনি দাবী করেন।
এলাকায় পুল করার বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান চেয়ারম্যান হুমায়ুন বেপারী পরিষদের কার্যতালিকা দেখিয়ে বলেন, লোহার পুলের কোন মালামালের বর্ণনা পরিষদের তালিকায় নেই।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. তৌফিক আজিজ জানান, ইউএনও সাহেবর নির্দেশ পেয়ে নথিপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নথিপত্র অনুযায়ী রিপোর্ট দেয়া হবে।
এ বিষয়ে ইউএনও মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, নথিপত্র দেখে রিপোর্ট করার জন্য উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি যেহেতু মালামালগুলো ইউনিয়নের সম্পত্তি তাই ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যানকেও ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে।

আরএ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ০:১৯:১৩ ● ৩০৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ