চরফ্যাশনে মশারি জালে গলদা-বাগদার রেনু আহরণ!

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » চরফ্যাশনে মশারি জালে গলদা-বাগদার রেনু আহরণ!
মঙ্গলবার ● ১৭ মে ২০২২


চরফ্যাশনে মশারি জালে গলদা-বাগদার রেনু আহরণ!

চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

চরফ্যাশনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা ও বুড়োগৌরাঙ্গ নদীতে অবাধে চলছে গলদা-বাগদা চিংড়ির পোনা আহরণ। প্রকাশ্যে পোনা আহরণ করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
বাগদা ও গলদা চিংড়ি ধরতে যে জাল ব্যবহার করা হয় তাতে ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা। নদীতে পোনা শিকারে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত দীর্ঘ ৬৫ দিন ছোট পোনা শিকার নিষিদ্ধ করেছে সরকার। তবে সে নিষেধাজ্ঞা মানছে না চরফ্যাশনের জেলেরা। মেঘনার উপকূলীয় অঞ্চলে গলদা-বাগদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির রেনু অবস্থান করে এবং জোয়ারের সময় এসব রেনু পোনা পাড়ে চলে আসে বলে জানা যায়। তখন এক শ্রেণির জেলে গলদা-বাগদা চিংড়ি পোনা ধরতে গিয়ে নদী ও সামুদ্রিক প্রজাতির বিভিন্ন পোনা নিধন করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা চরফারুকি বুড়োগৌরাঙ্গ নদীর এলাকা জুড়ে চলছে গলদা-বাগদা চিংড়ির পোনা ধরার মহাউৎসব। ছেলে, বুড়ো, শিশু সবাই মশারি এবং ঠেলা জাল নিয়ে চিংড়ি রেণু আহরণ করছে। একজন জেলে প্রতিদিন ৩ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার পোনা ধরতে পারে। আড়তদারের কাছে ১ শত পোনা ১ শ থেকে ১ শ ৫০ টাকা দরে বিক্রি করে। আড়তদার চিংড়ি ঘের-মালিকদের কাছে ১শ‘ বগদা পোনা ১২শ‘ টাকা করে বিক্রি করেন। মহাজনরা অগ্রিম দাদন ,ঋণ দেওয়ায় পোনা শিকারে উৎসাহী হয়ে উঠছে জেলেরা।
রেনু পোনা শিকারি আলী হোসেন মাতাব্বর জানান, গলদা চিংড়ির পোনা ধরা যে অবৈধ, তা তারা জানেন। কিন্তু বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই রেনু পোনা শিকার করতে হচ্ছে তাদের। রেনু ব্যবসায়ী ছাবের আহমেদ বলেন, মেঘনা ও বুড়োগৌরাঙ্গ নদীর গলদা চিংড়ির পোনা অল্প সময়ে বড় হয়ে যায়। এ জন্য খুলনা ও বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার চিংড়ি ঘের মালিকদের কাছে মেঘনার পোনার কদর বেশি। জেলেদের কাছ থেকে তারা রেনু পোনা কিনে গলদা ও বাগদা চিংড়ির ঘের মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। এ ব্যবসায় তাদের লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। এর সঙ্গে এই এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত আছে বলে তিনি জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সচেতন মহলের কয়েকজন জানায়, প্রতি মৌসুমে এখানে কোটি টাকার গলদা চিংড়ির পোনা বিক্রি হয়। চিংড়ির পোনা আহরণ করতে গিয়ে মাছের প্রজাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে নদীতে আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিনদিন পোনা আহরণ বেড়েই চলেছে।
চরফ্যাশন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মারুফ মিনার বলেন, গলদা-বাগদা রেণু পোনা ধ্বংস করা অবৈধ। যারা অবৈধভাবে রেণু পোনা আহরণ করছে তাদেরকে খুব দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এক শ্রেণির অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ীদের কারণে নদী থেকে পোনা ধরা বন্ধ করা যাচ্ছে না। পোনা আহরণ বন্ধে প্রয়োজনে অভিযান আরো জোরদার করা হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে মৎস্য সংরক্ষণ আইনের আওতায় তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

এএইচ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ০:১৪:১৬ ● ২১৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ