কলাপাড়া(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
কলাপাড়ায় লালুয়া ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা বাজারের এক চায়ের দোকানীর ১৭বছর বয়সী কন্যার গর্ভবতী হওয়ার ঘটনায় নিরীহ লোকদের ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। গর্ভের সন্তান কার এনিয়ে অশান্ত হয়ে ওঠেছে গ্রামটি।
স্থানীয় ও এলাকাবাসীদের সূত্রে জানা যায়, লালুয়া মুক্তিযোদ্ধা বাজারের এক চায়ের দোকানী মোসা: জোছনা বেগমের মেয়ে জাহেদা বেগমকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে দেন পার্শ¦বর্তী বালিয়াতলী ইউনিয়নের আলাউদ্দিনের ছেলে মনির হোসেনের সাথে। বিয়ের এক বছর যেতে না যেতেই জাহেদা গত ২রা মার্চ লালুয়া ইউনিয়ন কাজী অফিসে গিয়ে স্বামী মনির হোসেনকে তালাক দেয়। তালাকের দুই মাস পরে ধরা পরে জাহেদা চার মাস দশ দিনের গর্ভবতী। এ ঘটনাটি এলাকার একটি মহলের পরামর্শে একই এলাকার কলেজ পড়–য়া ইমরান হাওলাদার ঘটিয়েছে বলে প্রচার চালাতে থাকে। এনিয়ে কলাপাড়া থানায় মামলা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন গাজী(৪৪) সাগরকন্যাকে বলেন, এক বছর আগে এলাকাবাসী চাঁদা তুলে জাহেদাকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। মেয়ে গর্ভবতী চার মাস দশ দিনের। আর তালাক দিয়েছে দুই মাস আগে। স্বামীর দ্বারা গর্ভবতী হয়েছে এটাই স্বাভাবিক। এখানে কলেজ পড়–য়া ইমরানকে ফাঁসানো স্থানীয় কুচক্রী মহলের ভিলেজ পলিটিক্স। একই কথা বলেছেন, ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্বাস গাজী(৫০), এলাকার মটর সাইকেল ড্রাইভার আল-আমীন(৩৬), আমীর হোসেন খান(৫২), সালমা বেগম(৩৮). শিখা রানী(৪০)সহ আরো অনেকেই।
অভিযুক্ত ইমরান হোসেনের মা মোসা: জহুরা বেগম(৪০) সাগরকন্যাকে জানায়, আমি এলাকায় ছোট্ট একটি দোকান দিয়ে আমার ছেলেকে নাওভাঙ্গা টেকনিক্যাল কলেজ থেকে এবছর আইএ পাশ করিয়েছি। ছেলে গত ডিসেম্বর মাসে পরীক্ষা শেষে বিএ ভর্তির টাকা যোগার করতে ঢাকায় কাজ করতে যায়। সে এলাকায়ই ছিলো না। আমার ছেলের নামে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হচ্ছে।
লালুয়া ইউপি সদস্য মাসুদ হাওলাদার বলেন, জাহেদার তালাক দেয়ার সময় আমি কাজী অফিসে ছিলাম। তালাকের সময় সে গর্ভবতী ছিলো। আর এ অনাগত সন্তানের পিতা জাহেদার স্বামী মনির হোসেন এটাই স্বাভাবিক। যে ছেলে এলাকাতেই দীর্ঘ পাঁচ মাস অনুপস্থিত। তার নামে এধরনের অভিযোগ গ্রহনযোগ্য নয়।
লালুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি তারিকুল ইসলাম খান জানান, অন্যায়ভাবে নিরাপরাধ ছেলেকে ফাঁসিয়ে দেয়ার ঘটনাকে আমরা সমর্থন করি না। ভিক্তিহীন ও উদ্দেশ্যোপ্রনোদিত মিথ্যা, বানোয়াট ঘটনার অবতারনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানাই।
লালুয়া ইউনিয়নের (কাজী) আবু বক্কর বলেন, গত ২ মার্চ জাহেদা তার স্বামীকে তালাক দেয়। সে গর্ভবতী ছিলো ওই সময় তা আমাকে জানায়নি। তথ্য গোপন রেখেছে। ইসলামী আইন অনুসারে এ তালাক কার্যকরী হবে না।
মোসা: জাহেদা আক্তারের মা মোসা: জোছনা বেগম জানায়, আমার মেয়ের এ ঘটনার জন্য ইমরান হোসেকে দায়ী করছি। এ ব্যাপারে গত শুক্রবার কলাপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি।
লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দ্বারা সঠিক ঘটনা উদঘাটনের দাবি জানাই। নিরীহ লোকজন যেনো হয়রানীর শিকার না হয়।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: জসিম বলেন, এব্যাপারে কলাপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
এমবি/এমআর