আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
নদী ও খালের পানির লবনাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইকোলাই ও ভিব্রিও কলেরি ব্যকটেরিয়ার সংক্রমণ বেড়েছে। এতে নদী ও খালের পানি ব্যবহারে আমতলীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গত ১৫ দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই’শ ২২ জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই শিশু। আসন সংকটে রোগীরা বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পেতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল মুনয়েন সাদ সকলকে নদী ও খালের পানি ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে,গত ১৫ দিনে দুই’শ ২২ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই শিশু। প্রতিদিন গড়ে ১২-১৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। নদী ও খালের পানির লবনাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইকোলাই ও ভিব্রিও কলেরি ব্যকটেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। নদী ও খালের পানি ব্যবহারে ডায়রিয়ায় মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ডায়েরিয়া থেকে রক্ষা পেতে নদী ও খালের পানি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ১১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৫ জন রোগী। বেড সংঙ্কট থাকায় হাসপাতালের বারান্দায় রোগীরা বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সরকারীভাবে আক্রান্তের সংখ্যা দুই’শ ২২ জন হলেও বে-সরকারী ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা সহ¯্রাধিক ছাড়িয়ে গেছে বলে স্থানীয় সূত্র জানা গেছে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না এসে পল্লী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার কম আক্রান্ত রোগী হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ী যাচ্ছেন।
এদিকে রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেন হাসপাতাল থেকে শুধুই স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। এছাড়া আর কোন ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে না। স্বজনদের বাহির থেকে ওষুধ কিনতে হয়। ডায়েরীয়া রোগী সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় ডাক্তার ও সেবিকাদের সেবা দিতে হিমসীম খেতে হচ্ছে। বুধবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখাগেছে, ২৫ জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ১৫ জন শিশু। আসন না থাকায় রোগীরা বারান্দার ফ্লোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
মানিকঝুড়ি গ্রামের জাহাঙ্গির সরদার বলেন, ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুই দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। হাসপাতাল থেকে শুরু তিন ব্যাগ স্যালাইন দিয়েছে। এ ছাড়া সকল ওষুধ বাহির থেকে কিনতে হচ্ছে।
আমড়াগাছিয়া গ্রামের দুলাল, চিলা গ্রামের নুরজাহার ও পাতাকাটা গ্রামের সুফিয়া বেগম বলেন, ডায়েরিয়ার আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কোন বেড পাইনি, তাই বাড়ান্দায় বিছানা পেতে অবস্থান করেছি। গুলিশাখালী গ্রামের ইউনুস মোল্লা বলেন, তিন দিন হয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। স্যালাইন ছাড়া সকল ্ওষুধ বাহির থেকে কিনতে হয়।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল মুনয়েন সাদ বেড সংঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলেন, নদী ও খালের পানিতে লবনাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইকোলাই ও ভিব্রিও কলেরি ব্যকটেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ কারনে সর্বত্র ডায়রীয়া ছড়িয়ে পড়েছে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে মেডিকেল টিম সদা প্রস্তুত, পর্যাপ্ত ওষুধ ও স্যালাইন রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ডায়েরিয়া থেকে রক্ষা পেতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে। নদী ও খালের পানি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।