গলাচিপা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর গলাচিপায় জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টার সংঘর্ষে আহত চারজনের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব গোলখালী গ্রামের খলিল মৃধার বাড়িতে। এতে আহত হন খাদিজা বেগম (৫৬), তার ছেলে হাসান মাহমুদ ইমরান (২৭), আবু তালেব সরদার (৪৮) ও গুরুতর আহত হন আলী আশরাফ তালুকদার নামে এক ব্যক্তি। আলী আশরাফকে এলাকাবাসী উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহত আলী আশরাফ জানান, আমার পৈত্রিক সম্পত্তি জোর করে দখলের চেষ্টায় বুধবার (২৩ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আমার বাড়ির দক্ষিন পাশে খলিল মৃধার বাড়ির মধ্য দিয়ে রাস্তায় ওঠার সময় আমাদের একই এলাকার মো. জসিম তালুকদার (৪৫), মো. বাহাদুর তালুকদার (৩৮), মো. মামুন তালুকদার (২৮), মোঃ আলামিন তালুকদার (২৭), মো. শাওন তালুকদার (২৬), মো. শাহিন তালুকদার (৩২), মো. সেন্টু তালুকদার (৫৫), মো. জাকির হোসেন চৌকিদার (৪৮)সহ আরো অনেকে একত্রিত হয়ে তাদের হাতে থাকা লাঠি, বাংলা দা, লোহার রড দিয়ে আমাকে এলোপাথারী ভাবে পিটাতে থাকে। আমার ডাকচিৎকারে খাদিজা বেগম ও ইমরান এগিয়ে আসলে প্রতিপক্ষরা তাদেরকেও পিটাতে থাকে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে গলাচিপা হাসপাতালে ভর্তি করে।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে আবু তালেবকেও প্রতিপক্ষরা মারধর করে। এ বিষয়ে গোলখালী ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী খাদিজা বেগম বলেন, জামাত-বিএনপির তাড়নায় আমরা এলাকায় থাকতে পারি না। মামুন তালুকদারের বাবা মৃত রশিদ তালুকদার গোলখালী ইউনিয়নের রাজাকারের সদস্য ছিলেন। তার ছেলের নের্তৃত্বে জসিম তালুকদার, বাহাদুর তালুকদার, নাসির তালুকদার মিলে আমাকে ও আমার ছেলেকে মারধর করে।
এ বিষয়ে আবু তালেব জানান, আমাকে একা পেয়ে প্রতিপক্ষরা লাঠি সোটা দিয়ে মারতে থাকে। পরে আমি দৌঁড়ে পালিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে আসি। পাশাপাশি খাদিজা বেগম এবং ইমরান প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করে বাড়িতে আসেন। আহত আলী আশরাফের অবস্থা গুরুতর বিধায় তিনি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা যায়। গলাচিপা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জহিরুল ইসলাম বলেন, আহত আলী আশরাফের মাথা ফেটে যায়, শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুলা জখমের দাগ আছে। তিনি আমার চিকিৎসাধীনে ৩য় তলায় ভর্তি আছেন।
গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে গুরুতর আলী আশরাফ তালুকদারের স্ত্রী মোসা. রেখা বেগম বাদী হয়ে ১১জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। গলাচিপা থানার এসআই মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, আহত আলী আশরাফকে হাসপাতালে গিয়ে পর্যবেক্ষন করেছি। এ বিষয়ে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এআরএম শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে, আসামী জাকির চৌকিদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এসডি/এমআর