আমতলী ( বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পিকআপ গাড়ীর চাপায় পিষ্ট হয়ে ৭মার্চ ছেলের বউ নুরুন্নাহার বেগম (৪০) ও নাতি মোঃ রাকিব (১৬) নিহত হয়। ৭ দিন পরে গত রবিবার ছেলে মোঃ আবুল কালাম হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। ছেলের বউ, নাতি ও ছেলের মৃত্যুর ১১ দিন পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে মা তারা ভানু হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। একই পরিবারের ১১দিনের ব্যবধানে ৪ জনের এমন মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্ত্রী, ছেলের বউ, ছেলে ও নাতিকে হারিয়ে গুরুতর অসুস্থ বাবা আব্দুল খালেক। কিন্তু অর্থাভাবে তার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। পরিবারের সবাইকে হারিয়ে মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে একমাত্র মেয়ে পারভীন আক্তার। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার পশ্চিম চুনাখালী এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকেলে।
জানাগেছে, উপজেলার পশ্চিম চুনাখালী গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী নুরুন্নাহার ও ছেলে রাকিব মির্জাগঞ্জ দরবারের উদ্দেশ্যে গত ৭ মার্চ বাড়ী থেকে রওয়ানা দেয়। ভাই সিদ্দিক পাহলানের বাড়ীতে যাওয়ার পথে পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পশ্চিম চুনাখালী এলাকায় পিকআপ গাড়ীর চাপায় পিষ্ঠ হয়ে স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম ও ছেলে রাকিব নিহত হয়। তাদের হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন কালাম ও পরিবারের লোকজন। স্ত্রী-সন্তান নিহতের ৭ দিন পরে গত রবিবার ভোর রাতে স্বামী মোঃ আবুল কালাম হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। ছেলের আবুল কালাম, ছেলের বউ ও নাতির মৃত্যুতে অসুস্থ্য হয়ে পরেন মা তারা ভানু। ছেলের মৃত্যুর চার দিন পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে মা তারা ভানু হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরন করেছেন। স্বজন হারিয়ে তারা ভানুর স্বামী আব্দুল খালেক ও নাতনি পারভীন গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পরেছেন। অর্থাভাবে তাদের চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। ১১ দিনের মাথায় একই পরিবারের চারজনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিকে একই পরিবারের পরপর চারজনের মুত্যুতে এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বাড়ীতে সুনসান নিরবরা। স্বজনদের কান্নার শব্দ নেই। বাবা আব্দুল খালেক গুরুতর অসুস্থ্য,নাতনি পারভীন আক্তার মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছেন। এলাকাবাসী তারা ভানুর মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রতিবেশী মোঃ রফিকুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ছেলে, ছেলের বউ ও নাতি হারানো শোক সইতে না পেয়ে মা তারা ভানু হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। ১১ দিনের মাথায় একই পরিবারে চার জনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি আরো বলেন, এখন অসুস্থ্য আব্দুল খালেক ও তার নাতনিকে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু হতদরিদ্র এ পরিবারের পক্ষে ভালো চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। দ্রুত তাদের চিকিৎসা করাতে না পারলে আবার কি অঘটন ঘটে।
এমএইচকে/এমআর