তালতলীতে ইউএনও’র বিরুদ্ধে ঘূষ-দূর্ণীতির অভিযোগ!

প্রথম পাতা » বরগুনা » তালতলীতে ইউএনও’র বিরুদ্ধে ঘূষ-দূর্ণীতির অভিযোগ!
মঙ্গলবার ● ৮ মার্চ ২০২২


তালতলীতে ইউএনও’র বিরুদ্ধে ঘূষ-দূর্ণীতির অভিযোগ!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

ঘুষের টাকা না দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন প্রকল্পের ঘরের চাহিদা তালিকা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় পাঠায়নি তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হোসেন। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে এমন লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোসলেম আলী হাওলাদার। এছাড়াও ইউএনও বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরনের অভিযোগ রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরনের সুরহা না হওয়া পর্যন্ত ইউএনওর সকল কার্যক্রম বয়কটের ঘোষনা দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন প্রকল্পের ঘরের তালিকার চাহিদা চেয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় গত বছর ডিসেম্বর মাসে চিঠি দেন। ওই চিঠির আলোকে মুক্তিযোদ্ধারের ঘরের তালিকা করে পাঠানোর নির্দেশ রয়েছে ইউএনও মোঃ কাওসার হোসেনের। কিন্তু চিঠি পেয়েই ইউএনও তালিকা করতে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ঘর প্রতি ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন। ইউএনও দাবীকৃত ঘুষ দিতে রাজি হয়নি মুক্তিযোদ্ধারা। এ কারনে গত ৩০ জানুয়ারী প্রকল্পের ঘরের তালিকা চাহিদা তৈরির সভা ডেকে অজ্ঞাত কারনে সভা মুলতবি করেন তিনি। ঘুষের টাকা না পেয়ে ইউএনও মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন ঘরের তালিকা মন্ত্রনালয়ে পাঠায়নি এমন অভিযোগ করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোসলেম আলী হাওলাদার। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানী, ব্যঙ্গ বিদ্রেুাপ ও বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধা ভবন সাজ সজ্জা না করে ২০হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন ইউএনও এমন অভিযোগও মুক্তিযোদ্ধাদের। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে এমন অসৌজন্যমুলক আচরনের কারনে গত সোমবার প্রশাসনের ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ উদযাপন অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন তারা। দ্রুত বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ইউএনও’র বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান মুক্তিযোদ্ধারা।
তালতলী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মোঃ মোসলেম আলী হাওলাদার বলেন, তালতলীর মুক্তিযোদ্ধারা ইউএনও কাছে অসম্মানের পাত্রে পরিনত হয়েছে। ইউএনও মুক্তিযোদ্ধাদের অহরহ হয়রানী, ব্যঙ্গ ও বিদ্রোপ করে থাকেন। তিনি আরো বলেন, বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধা ভবনে সাজ সজ্জা না করেই ২০ হাজার টাকা ইউএনও আত্মসাৎ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে ইউ্ওনও এমন আচারনের সুরহা না হওয়া পর্যন্ত আমরা তার সকল কার্যক্রম বয়কট করেছি।
তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তৌফিকুজ্জামান তনু বলেন, ইউএনও তালতলীতে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পরেছেন। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন করে আসছেন। তিনি আরো বলেন, ইউএনও উপজেলা প্রশাসনকে দুর্নীতির আখরায় পরিনত করেছেন।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হোসেন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরনের কথা অস্বীকার করে বলেন, ডিপিপিতে তালতলী উপজেলায় ঘর বরাদ্দ নেই। তাই তালিকা করা হয়নি। তিনি আরো বলেন, ১০ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দিতে আমার কাছে আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধারা। আমি ওই মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা  না দেয়ায় আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:৩৮:৩৮ ● ২২৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ