পিরোজপুরে ঘরের সাথে কর্মসংস্থানে পাল্টে গেল রুমার জীবন

প্রথম পাতা » পিরোজপুর » পিরোজপুরে ঘরের সাথে কর্মসংস্থানে পাল্টে গেল রুমার জীবন
সোমবার ● ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২


পিরোজপুরে ঘরের সাথে কর্মসংস্থানে পাল্টে গেল রুমার জীবন

পিরোজপুর সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

মাত্র ছয় বছর বয়সে তাকে পিরোজপুর শহরের রাস্তায় ফেলে যান তার স্বজনেরা। সেই থেকে ফুটপাতে বেড়ে ওঠা। ভিক্ষা করে জীবন চালিয়েছেন। ভ্যান চালিয়ে সংগ্রাম করে যাচ্ছিলেন এই নারী। বিয়ের সাড়ে সাত বছর পর তার এক ছেলেসন্তান হয়। নাম রাখেন মো. ইব্রাহিম। এখন ছেলের বয়স ৫ বছর। কিন্তুু ভাগ্য সহায় হলো না। দুই বছর আগে স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে রুমা ও তার ছেলেকে ছেড়ে চলে যান। আবার একা হয়ে যান রুমা। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করেন। মানুষের কটু কথা ও মনের দুঃখে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বারবার। কিন্তুু ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে ফিরে আসেন। শেষে শুরু করেন ভিক্ষা। ভিক্ষা  করে ফুটপাতে থেকে জীবন চলছিল তার। ভিক্ষা করে যখন তিনবেলা খাবার জুটছিল না তখন ভ্যান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন রুমা। ছেলেকে ফুটপাতে রেখে ভ্যান চালাতে শুরু করেন। ভ্যান চালিয়ে একবেলা খাবার খান। অনেক সময় না খেয়ে থাকেন। ফুটপাতে বস্তা গায়ে দিয়ে ঘুমান। লোকে কটু কথা বললেও সহ্য করেন।
স্হানীয় এক সাংবাদকর্মী তার এই দুঃখময় জীবনের কথা তুলে ধরেন সংবাদের মাধ্যমে। যা পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির আহমেদ এর নজরে আসলে রুমা বেগমের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি ঘরের ব্যবস্হা করা হয়।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে টোনা ইউনিয়নের লখাকাঠী গ্রামের রুমা বেগমের ঘরের পাশেই তার নিজস্ব কর্মসংস্হানের উদ্দেশ্যে তৈরি একটি দোকানের উদ্বোধন করেন পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির আহমেদ। সদর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় ও সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অর্থায়নে দোকান পেয়েছে রুমা।
এসময় আরো উপস্হিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ভূমি ফারজানা আক্তার, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ মতিউর রহমান, টোনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ইমরান আলম খান হারুনসহ আরো অনেকে।

পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির আহমেদ জানান, রুমা বেগম শহরের বিভিন্ন স্হানে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। তিনি একজন বিধবা নারী। তার ঘর বা আশ্রয় কিছুই ছিল না। তাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তাকে একটি ঘর প্রদান করা হয়েছে। ঘরের পাশেই কর্মসংস্হানের  জন্য তাকে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ও সদর উপজেলা সমাজসেবা বিভাগের অর্থায়নে একটি দোকান দিয়ে মালপত্র কিনে দেয়া হয়েছে। আশা করছি তিনি এটি পরিচালনা করে সাবলম্বী হতে পারবেন এবং তার আর কষ্ট করে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হবে না।


আরএইচএম/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:৫২:২৮ ● ৬২৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ